যখন ছাত্রলীগ বা আওয়ামীলীগ এর কোন অপকর্মের বিরুদ্ধে জনরোষ ওঠে তখন ঘটনাকে জাস্টিফাই করতে নানা কূটচালের আশ্রয় লয় ক্ষমতাসীনরা। তখন ইনিয়ে বিনিয়ে নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হাজির করে। এরকম কিছু তত্ত্ব হল দলে কাউয়ালীগ ঢুকেছে, জামাত শিবির ঢুকেছে, ছাত্রদল ঢুকেছে। বা অমুক দিবস কে কালিমালিপ্ত করতে অন্যদের ষড়যন্ত্র। যেন সোনার ছেলেরা কিছুই করতে পারে না? আহা! কতনা ইনোসেন্ট আমাদের ভাইগুলো যে নারীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়া কখনো তাদের কল্পনায় আসেনা? আহারে। যে সংগঠন নিজের দলে কে ঢুকবে না ঢুকবে, কে সদস্য হবে নির্ধারণ করতে পারে না তাদের সংগঠন রাখার দরকার কি? যেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী স্বীকার করেছেন বাংলামোটরের দিকে ছাত্রীকে হেনস্তা করা হয়েছে এবং পুলিশ উদ্ধার করে যেতে দিয়েছে সেখানে নিশ্চই সত্যতা আছে।
তাহলে চট্টগ্রামের ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক যে ধরণের নোংরা নির্দেশক নির্যাতনের শিকার মেয়েদের উপর দিয়েছে তাতে তো প্রমাণ হয় ছাত্রলীগ কোন সভ্যরা করে? আমরা কী ভুলে গেছি পহেলা বৈশাকের নারী নির্যাতনেত ঘটনা? ওখানে কারা ছিল। কারা প্রতিনিয়ত নারী ধর্ষণ, ছাত্রী ধর্ষণ করে? কারা জাবিতে ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপন করে? কারা ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ইয়াবা নিয়ন্ত্রণ করে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তদন্তে ইয়াবা ব্যবসার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় নেতাদের নাম আসে। তাহলে সব এগুলো জামাতি বিএনপি আর বামাতিদের ষড়যন্ত্র? মুক্তিযুদ্ধের মহান সিপাহসালারদের ক্ষমতা থেকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র, তাই না? আর কতকাল নির্বিঘ্নে লুটপাট চলবে? মুক্তিযুদ্ধকে ভাঙিয়ে আর কত খাওয়া হবে?
ক্ষমতার ছত্রছায়ায় আজ ছাত্রলীগ নামক প্রতিষ্ঠান সব ধরণের অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে। সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, অন্যের সম্পদ দখল এগুলো হল ছাত্রলীগের কাজ। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের লড়াইয়ের আকাঙ্ক্ষা কোনটাই আর ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগ ধারণ করে না। কারণ যে উপনিবেশিক নিপীড়নের বিরুদ্ধে এদেশের জনগণ লড়াই করেছিল সেই নিপীড়কের ভূমিকায় এখন ছাত্রলীগ দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক শ্রেণী চেতনার কারণে আওয়ামীলীগ আজ শোষণ আর নির্যাতকদের পাহাড়াদার। এরা দশভাগ শোষকদের শোষণ এবং লুটপাটকে বৈধ করার চেষ্টায় আছে। দেশের সাধারণ জনগণের সাথে এসবের সম্পর্ক নাই।
কতিপয় কর্পোরেট নারীবাদীদের কাছে নারী নির্যাতন এখন মূখ্য নয়, মূখ্য হয়ে ওঠেছে ক্ষমতাসীনদের পক্ষে সাফাই গাওয়া। এসব ভেকধারী নারীবাদীদের চিনে রাখাও দরকার। নারীবাদ যদি শোষীতি নিপীড়িত নারীদের পক্ষে দাঁড়াতে না পারে তবে এসব নারীবাদ লোক দেখানু সুবিধাবাদ। এই নারীবাদ সাধারণ নারীদের মুক্তি দিতে পারে না, নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে না। এসবের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে না দাঁড়াতে পারলে দেশ আজ রসাতলে চলে যাবে। সাহস নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর এখনই সময়। শুরু হোক প্রতিরোধ যুদ্ধের।
EmoticonEmoticon