শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৭

প্রশাসনের বোলডুজার...

বগুড়া শহরে প্রশাসন বোলডুজার দিয়ে কয়েকটি অটোরিক্সা গুড়িয়ে দিয়েছে। কান্নারত! কয়েকজন চালকের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। এর মধ্যে নিদারুণ হতাশায় এক চালকের কান্নার ছবিটি যে কোন নির্দয় মানুষকেও আঘাত করবে। গরীব এই চালক গুলার অপরাধ কী? বড় কোন অপরাধ নয়, বিনা অনুমোদনে এরা ব্যাটারিচালিত রিক্সা চালাচ্ছিল। আগে আদিম যুগের পায়ের উপর ভর করে শারীরিক শক্তি ব্যয় করে রিক্সা চালাতো। এখন একটু সুবিধাজনক যন্ত্রের উপর ভর করে চালায়। এই সামান্য একটু সুখ আমাদের প্রশাসনের হর্তাকর্তাদের সহ্য হল না। উনারা এই গরীব মানুষগুলোর আয়ের একমাত্র সম্পদ ধ্বংস করে দিলেন?
কিন্তু সারাদেশে ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা কয়েক লক্ষ হবে। ফলে সরকারের পক্ষ থেকে এদেরকে পারমিটের আওতায় আনা যেত না? একটি বিধিমালা এবং বাৎসরিক করের মাধ্যমে এই ব্যাটারি চালিত রিক্সাগুলোকে নিয়মের মধ্যে আনা যেত। একদিকে যেমন সরকারের রাজস্ব আদায় হত অন্যদিকে অনুমোদন থাকলে এভাবে প্রশাসনের রোশানলে এই চালকদের পড়তে হত না। কিন্তু না কোন এক রহস্যের সুতোয় এদেরকে অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে না। কারণ হল ভারতীয় সিএনজি মার্কেটের ব্যবসা কমে যাবে। কিন্তু চাইলে দেশীয় প্রযুক্তিতে এই ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা বানানো যাবে। ফলে অর্থের সাশ্রয় ও হবে। এর জন্য জনবান্ধব একটি সরকার দরকার।
রাষ্ট্র হল একটি ভুখন্ডে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান। এখানে বিভিন্ন শ্রেণী, ধর্ম এবং জাতির মানুষের বাস থাকবে। কিন্তু ক্ষমতা কোন একটা শ্রেণীর অধীনে থাকবে। আধুনিক বুর্জোয়া রাষ্ট্র বুর্জোয়া শ্রেণীর অধীনে থাকে। ফলে বুর্জোয়াদের সুবিধায় আইনকানুন নিয়মনীতি সবকিছু করা হয়। রাষ্ট্রযন্ত্রের  প্রশাসনিক ব্যবস্থা বুর্জোয়াদের জন্য কাজ করে। ফলে রাষ্ট্রের ভিতরে অন্য যে শ্রেণীগুলোর বসবাস তা বুর্জোদের অধীনস্থ দাস ছাড়া কিছু নয়। সবচেয়ে আধুনিক বুর্জোয়া গণতন্ত্রে ও বৈষম্য এবং শোষণ থাকে। ফলে এই রাষ্ট্রযন্ত্রকে গুড়িয়ে দেওয়া ছাড়া নিপীড়িত প্রলেতারিয়েতের আর পথ নেই।


EmoticonEmoticon