সিপিবি'র দলিল গুলো পড়লে আমরা পাই...তাদের বিশ্লেষণে বাংলাদেশে কখনো সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তারা সামন্ততান্ত্রিক ও বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক বিকাশের জন্য ভোটতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হয়েছে। এবং বারবার আওয়ামী লীগের সাথে জোট করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সিপিবি কোন কালেই একক ব্যক্তির ইচ্ছায় চলেনি। কংগ্রেস কর্তৃক লাইন অনুসারে প্রত্যেক কমরেডদের চলতে হয়। আমরা ইতিহাসে পাই কমরেড মণি সিংহ বাকশালের বিরোধীতা করলেও পার্টির সিদ্ধান্ত মেনে সেইদিন কমরেড ফরহাদের নেতৃত্বে যোগদান করেছিল। তাই ৪ জুন ২০১৮ সালে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে আওয়ামী ইফতার পার্টিতে যোগদানে যে সমালোচনা ঝড় ওঠেছে...তাতে আমার মনে হয় সমালোচনাকারীরা সিপিবি'র দলিল গুলো পড়েনি। বরং কমিউনিস্ট পার্টি নামটি দেখেই আলোচনায় অংশ নিচ্ছে। শুরু থেকে সিপিবিও তাদের পার্টির কমরেডদের তাদের লাইন পরিষ্কার করতে পারেনি। আমরা ১৯৬৯ সালেও দেখেছি পার্টি ভিতরে অতি বিপ্লবীরা ছিল কোনঠাসা অবস্থায়। এদেশে সিপিবি এখনো বিপ্লবের প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। সাম্রাজ্যবাদের সাথে লড়াই করেনি। বরং মস্কোর লাইন অনুসারে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামকে, গণতান্ত্রিক সংগ্রামকে গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নও এরা নরমপন্থা। আদৌ এই অঞ্চলে বিপ্লবের স্বপ্ন বুনেছে চিনপন্থিরা। ভাসানী-মেননরা ভাবতেন বিপ্লব ঘটনো সম্ভব। ভাসানী কৃষকদের নিয়ে শহর ঘেরাও করতে চান। ঠিক তখন ১৯৬৯ সালে আওয়ামী লীগ ছিল মন্দের ভালো। তখনো সাম্প্রদায়িক শক্তি আজকের মত বিকাশ হয়নি। তখন দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল অনুপস্থিত। তখন বাম ঐক্যজোট চাইলে বিপ্লবী সরকার গঠন করা যেতো। আমি মনে করি তখনকার বাস্তবতা থেকে আজকে মন্দের ভালো এর সাথে জোট গঠনে মেননপন্থিদের যুগ উপযোগী সিদ্ধান্ত। কারণ আজ মন্দের ভালো এর বিকল্প মন্দ বিরোধী শক্তি উপস্থিত। তাই ৭১-এর আওয়ামী লীগের সাথে জোট গঠন অবধি আজকে অনেক বেশি আবশ্যক। আমার মনে হয় চিনপন্থিরা বরাবরই সমাজ বিশ্লেষণে অগ্রগামী ছিল। যে ত্রুটি গুলো আজ আওয়ামী লীগের ধরা হয় তা যুগে যুগে তাদের সব সময় ছিল। আজ চাইলেও সিপিবি বিকল্প শক্তি হতে পারছে না। কমরেডদের ভিতরে হতাশা ক্ষোভ দিন দিন দানা বাধছে। যাক গে, সেলিম ভাই যদি বাসদ ও বাম মোর্চার নেতাদের সাথে নিয়ে যেতেন তাহলে ঐক্যটা ভালো হতো। বিভ্রান্তির জন্ম হতো না।
মঙ্গলবার, ৫ জুন, ২০১৮
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
EmoticonEmoticon