রবিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৮

বাংলাদেশের বিচ্ছিন্ন, রক্তাক্ত ও বিলুপ্তপ্রায় হিন্দু

জেনারেল নিয়াজীর ভাতিজা (শোনা কথা) বিলেত ফেরত ক্রিকেটার ইমরান খান এখন পাকিস্তানের ক্ষমতায়। প্লেবয় হিসেবে তিনি জগৎ বিখ্যাত। তার বিজয়ে প্রকাশ্যে রাজপথে ব্রা খুলে বুক দেখিয়ে আনন্দ উৎসব করেছে এক মুমিনা। এটা ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়!
ইমরান খান বলেছেন, " পাকিস্তান চলবে মদিনা সনদ অনুযায়ী। "
লক্ষণ স্পষ্ট।
"দেশ চলবে মদিনা সনদে। " বহু আগেই বলেছিলেন শেখ হাসিনা। দেশে খুব মসজিদের অভাব তাই মসজিদ বানাচ্ছেন তিনি। কয়লা চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট, ধর্ষণ, খুন, গুম, হুমকি, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, ব্যাংক লুট, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা উধাও, সোনার রিজার্ভ গায়েব এরকম অজস্র অভিযোগে এই মহিলার পদত্যাগ করা উচিত ছিল বহু আগেই  কিন্তু তিনি প্রাণপণে আকঁড়ে আছেন গদি। ভোটাধিকারের কপালে করছেন ঝাঁড়ুপেটা। হয়েছেন হেফাজতের তেঁতুল!

শেখ মুজিবও কম মুসলমান ছিলেন না। বাঙালি দাবি করা বঙ্গবন্ধু নিজের সন্তানদের নাম পর্যন্ত বাংলায় রাখতে পারলেন না। দ্রতই সম্পর্ক গড়ে তুললেন পাকিস্তানের সঙ্গে, করলেন ভুট্টোর সঙ্গে কোলাকুলি। যে ভুট্টো বাঙালিকে বাস্টার্ড বলতেন।
জিয়া, এরশাদ, খালেদা তো সারাজীবন পাকিস্তানের আদর্শ বাস্তবায়নের জন্যই জীবনপাত করেছেন।
এরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশ ও তাঁর সংবিধানের মুসলমানিত্ব করেছেন।

শেখ মুজিব হিন্দুদের সম্পত্তি ফেরত দেননি। জিয়া দেননি। এরশাদ দেননি। খালেদা দেননি। শেখ হাসিনা দেননি। বাংলাদেশের হিন্দুদের সম্পত্তির বেশিটাই আওয়ামী লীগারদের দখলে। যে হিন্দু  সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাত্তরে তাদের ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কোন সরকার। সবার জন্য কোটা আছে মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের জন্য কোনো কোটা নেই, নেই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা।
এরা মুখে যাই বলুক, এরা আসলেই মুসলমান। ভালো মুসলমান। বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এক মন্ত্রী বলেছেন, রোহিঙ্গাদের মতো হিন্দুদেরও এদেশ থেকে তাড়ানো হবে। আর এক মন্ত্রী হিন্দুদের বলেছেন মালাউন। তারা এখনও বহাল তবিয়তে মন্ত্রী। কদিন আগে গয়েশ্বর রায়কেও রিজভী মালাউন বলে গাল দিয়েছেন। এবং দুঃখ প্রকাশ করেননি।
মূলত হিন্দুদের রক্ত সম্পদ আর ইজ্জতের উপর দাঁড়িয়ে আছে আজকের বাংলাদেশ।একাত্তরে পাকিস্তানি কুত্তার বাচ্চাদের এবং এদেশের বহু হারামীর  প্রধান টার্গেট ছিল এদেশের  হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি।  সাতচল্লিশ পঁয়ষট্টি একাত্তরের ধারাবাহিকতা এখনো চলছে পুরোদমে।এখনো লিখিত এবং ঘোষণা দিয়ে চলছে হিন্দু এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের নিধন ও মাতৃভূমি থেকে উচ্ছেদের সম্মিলিত প্রয়াস। সাফল্যের হার নব্বইয়েরও বেশি।
তবে এদেশ থেকে শুধু হিন্দুই বিলুপ্ত হচ্ছে তা না, পাশাপাশি নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে  বাক স্বাধীনতা, ধর্ম নিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র, সহমর্মিতা, দায়িত্বশীলতা, প্রেম আর প্রকৃত বাঙালিয়ানা।
আরব ছাগলদের চারণভূমিতে রূপান্তরিত হয়েছে আদিবাসী ও হিন্দুদের পরিত্যক্ত ও দখলীকৃত মাতৃভূমি। স্কুল কলেজ মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষার উপকরণ হিসেবে বিতরণ করা হচ্ছে নির্ভেজাল ঘাস।
হিন্দুদের ভরসা ছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু ভুল ভাঙ্গতে দেরি হয়নি। এখন বাংলাদেশের অবশিষ্ট হিন্দুদের হৃদয়ে হতাশা আর চোখে অন্ধকার।

কিন্তু সুবিধাবাদি ধর্ম নিরেপেক্ষতার মূলো ঝুলানো আওয়ামী লীগ?
এখন আওয়ামী লীগ পুরোপুরি প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে তারাও ভালো মুসলিম। এখন আর তারা হিন্দু কিংবা নাস্তিক ট্যাগ খায় না। ( মনে আছে? "মুক্তমতের পক্ষে কথা বলে আওয়ামী লীগ নাস্তিক ট্যাগ খাইতে চায় না "- মো: সজীব ওয়াজেদ  জয়। )আর হিন্দুদের জন্য কাজ বা কথা বলা বন্ধ করেছে তারা বহুদিন আগেই। শত্রু কিংবা অর্পিত সম্পত্তির বেশিটাই লীগারদের দখলে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতার জন্য আদর্শ ত্যাগ করতে একটুও দেরি করেনি, কোনও সময়েই।
ভোটের একটা ব্যাপার আছে না! ভাবনা স্পষ্ট, " শালার মালু, ভোট তো শেষ পর্যন্ত আমাকেই দিবি, যাবি কই ! "

তাহলে হিন্দুরা কী করবে?
কী আর করবে, মরবে! হ্যাঁ, মরবে।
বীরের মতো মরবে না ইঁদুরের মতো ওটা তাদের পছন্দ।

শুধু একটু মনে রাখুন তাকে,
হ্যাঁ, আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজীর কথাই বলছি আবার। জেনারেল নিয়াজী। টাইগার নিয়াজী। ইসলামী প্লেবয় ইমরান খানের আদর্শ চাচাজি!
একাত্তরে হুঙ্কার দিয়েছিল, শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত লড়বে!
লোকের বলার অপেক্ষা রাখেনি, নিজেকে নিজেই বাঘ দাবি করে বুক ঠুকে বলেছিল," বোতলের দুধ খাইনি, মায়ের দুধ খেয়েছি! "
তারপর? তারপর মা ভক্ত নিয়াজী এবং তার শার্দুল বাহিনী বাংলার লক্ষ নারীদের ধর্ষণ করে যুদ্ধে তাদের অসাধারণ কারিশমা দেখায়। নিজ মায়ের সম্মান দেখায় অন্যের মা বোনকে ধর্ষণ করে। এটাও ইসলামের ঐতিহাসিক শিক্ষা । একাত্তরে ফরাসী পত্রিকায় এক সাক্ষাতকারে নিয়াজী বলেন, " যুদ্ধে হচ্ছে ঢাকায়, ধর্ষণ করার জন্য আমরা কি করাচী যাব? "
তারপর সেই পুরোনো গল্প, বিমানবন্দরে গিয়ে ভারতীয় জেনারেলকে অভ্যর্থনা জানালো এই কাপুরুষ সেনাপতি। ওই জেনারেলকে গার্ড অফ অনার দেওয়ালো আর সমস্ত অস্ত্রশস্ত্র তুলে দিলো ভারতীয়দের হাতে।
এই ভেড়া স্বভাবের জেনারেলদেরও মূল টার্গেট ছিল বাংলাদেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পূর্ণ বিলুপ্তি। তাই পাকিস্তানি বর্বরগুলো বেছে বেছে প্রধানত হিন্দুদের খুন করতো, ধর্ষণ করতো হিন্দু মেয়েদের আর লুটপাট করতো হিন্দুদের সম্পত্তি।
শুধু যুদ্ধ জয় নয় ইসলামের প্রসার ছিল পাকিস্তানের যুদ্ধনীতির প্রধান অংশ। এটা তারা প্রকাশ্যেই বলেছে।
হ্যাঁ, সেই জেনারেলরা আজ আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।
সুতরাং এটা প্রমাণিত প্রতিশোধ নিতে শুরু করলে হায়েনাও তার থাবা গুটিয়ে নেয়। ইঁদুরের মতো লুকিয়ে যায় গর্তে।

হ্যাঁ, যারা মারতে ভয় পায় তারা মার খায়।
যারা মরতে ভয় পায় তারা নিশ্চিত মরে।


EmoticonEmoticon