রবিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৮

বিচ্ছিন্ন ও অবিচ্ছিন্ন ঘটনার নিরিবিচ্ছিন্নতা

নবী মুহম্মদ মোট সাতাশটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। বহু আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশী নিহত হন সেসব যুদ্ধে।  যুদ্ধগুলো তিনি শান্তির ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য করেছিলেন।
কোরআনের সুরা কাউসার ৩/৩,লাহাব ৫,হুদ ১৭, আল ইমরান ৮৫, আত্ তাহরীম ১২/৭ও৯, আলহাছর ২৪, আল মুমতাহিনা ১,৮,১৩, আছ ছফা ১৪, মায়েদা ৩৩ এবং সমগ্র কোরআনের এরূপ ৫২৭ টি আয়াতে ইহুদি খ্রিস্টান ও অবিশ্বাসীদের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ  ও গালাগাল দেয়া হয়েছে।আর ১০৯টি আয়াতে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বলা হয়েছে।
এলাকা থেকে পালানোর পর মুহাম্মাদ আশ্রয় নেয় ইহুদিদের কাছে। ইহুদিদের আশ্রয়ে থেকে খেয়ে শক্তি সঞ্চয় করেন নবি। তারপর ইহুদিদেরকে মুসলমানদের প্রধান শত্রু ঘোষণা করেন। স্পষ্ট নির্দেশ দেন, আল্লাহর নির্দেশে ইহুদিদের সবসময় পালিয়ে বেড়াতে হবে। এদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা যাবে না এবং হত্যা কর যেখানে পাও।
পুরো মানবজাতির বিরুদ্ধে ইসলাম দ্ব্যর্থহীন ভাষায় প্রকাশ্য যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
এবং তা কেয়ামত পর্যন্ত ননস্টপ চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে হযরত উমর ও তার আপন মামা বিরোধী পক্ষ হিসেবে মুখোমুখি হয়েছিলেন। মামার কাছে তলোয়ার লড়াইয়ে পরাজিত হয়েছিলেন উমর। কিন্তু ভাগ্নেকে মামা হত্যা করলেন না। মানবিকতা আর আত্মীয়তার মর্যাদা দিলেন তিনি।
কিন্তু পরক্ষণেই প্রথম সুযোগেই উমর তার মামাকে হত্যা করলেন।
পরবর্তীতে উমর ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, "ওটা আমি ইসলামের জন্য করেছি। "

নবীজীর একজন প্রিয় সাহাবী আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ। তিনি তার পিতাকে হত্যা করেছিলেন। কারণ তার পিতা ছিলেন মুশরিক।

সম্প্রতি, জঙ্গিপনা ছাড়তে বলায় মাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে একজন আইএস যোদ্ধা। মায়ের নাম, লিনা আল কাশেম। পুত্রের নাম, আলী সাকর।
"কেন হত্যা করলেন মাকে? "
উত্তর ছিল, "ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য। "

বাদশাহ আলমগীর মুসলিমদের কাছে বীর, যিনি শুধু সিংহাসনের লোভে নিজ ভাইদের নির্দ্বিধায় খুন করেছিলেন। তার জেষ্ঠ ভ্রাতা দারা ছিলেন একজন কবি, দার্শনিক এবং মানবতাবাদী। তিনি বহু গ্রন্থ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করেন। উত্তরাধিকারী হওয়া সত্ত্বেও সিংহাসনের প্রতি তার কোন আগ্রহই ছিল না । আলমগীর তাকেও হত্যা করেন এবং তার মাথা কেটে নিজ পিতাকে উপহার দেন।  শুধু কি তাই আলমগীর তার পিতা শাহজাহান ও বোন জাহানারাকেও কারাগারে অন্তরীণ করেন। এবং সম্রাট শাহজাহান কারাগারেই মৃত্যুবরণ করেন। ভিন্ন ধর্মীদের উপর নির্যাতনে আলমগীরের রয়েছে অনন্যসাধারণ রেকর্ড।

বিদেশী গুন্ডা সর্দার শাহজালাল যিনি শান্তির ধর্ম ইসলাম প্রচারের জন্য বারবার হিন্দুদের উপর হামলা করেছিলেন। ঐ বিদেশী  বর্বরদের কাছে সিলেট বাপের সম্পত্তি ছিল বোধহয়! ঐ দরবেশের নৃশংস তলোয়ার এখনো সংরক্ষিত! যা ইসলামের মানবতা প্রকাশ করছে!
মুসলমানরা ঐ শাহজালালকেও আউলিয়া, পীর, হযরত বানিয়ে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় আর বিমান বন্দর বানিয়েছে তার নামে। গুন্ডাভূমি হয়ে গেছে পূণ্যভূমি!

বখতিয়ার খিলজি সতেরজন ঘোড়াসরোয়ার নিয়ে লক্ষণ সেনের রাজপ্রাসাদে ঢুকেছিল বণিক বা ব্যবসায়ীর পরিচয় দিয়ে। তাদেরকে বিশ্বাস করেছিল দ্বাররক্ষকরা।
খিলজির অন্যান্য সৈনিক লুকিয়েছিল জংগলে। তারপর হঠাৎ যৌথভাবে আক্রমণ করে তারা অপ্রস্তুত রাজপ্রাসাদ। মুসলমানরা এদের বীর বলে, কারণ বিশ্বাসঘাতকতা আর বর্বরতাই হচ্ছে এদের বীরত্ব।
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় ছিল নালন্দা। যেখানে দেশ বিদেশের ছাত্ররা পড়তে আসত। আবাসিক হলে থাকত হাজার হাজার ছাত্র শিক্ষক। প্রত্যেককে কচুকাটা করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস দিয়েছিল অমানুষ খিলজি।বিশাল লাইব্রেরি আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল ঐ মুসলিম পশু। মাসের পর মাস ধরে জ্বলেছিল সেই লাইব্রেরী।

তালেবান, আল কায়দা, বোকো হারাম, আইএস কর্তৃক পুরোনো ঐতিহ্য ধ্বংস করা কিংবা অসংখ্য নিরীহ মানুষকে প্রকাশ্যে জবাই করে হত্যা আর নারীদের ধর্ষণ, গরুছাগলের মতো বেচাকেনা সবই তো আসলে বিচ্ছিন্ন ঘটনা, তাই না?
কাবার ছবির উপর শিবের মূর্তি স্থাপন করে হিন্দুদেরকে গনিমতের মাল বানানো কিংবা নিজ ধর্মগ্রন্থ কোরআনের উপর হাগুমুতো করে অন্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা আসলে কি কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা? আর নিরীহ নিত্যরঞ্জন পান্ডেকে ইসলামী কায়দায় পেছনে থেকে কুপিয়ে হত্যা সবই কি আসলে বিচ্ছিন্ন ঘটনা?
কিংবা একাত্তর? বাংলদেশ দেশ থেকে পুরো হিন্দু সম্প্রদায়কে পরিকল্পিত ভাবে নিঃচিহ্ন করার পরিকল্পনা! আর রাজাকার, আলবদর, আলশামস এর প্রকৃত বীজ তো ইসলামেরই ইতিহাসে। এগুলো মুহম্মদেরই তৈরি বাহিনী! নতুন করে দেখিয়েছে এরা কী করতে পারে।
আসলে সবই আসলে সেইসব অবিচ্ছিন্ন ঘটনার নিরিবিচ্ছিন্নতা। প্রত্যেক ঘটনার অনুপ্রেরণা আছে ইসলামের কর্মকাণ্ডে এবং কোরআন হাদিসের পাতায় পাতায়।

মাইন্ড ইট
বর্বর মানে বীর! আর ইসলাম মানে শান্তি!


EmoticonEmoticon