রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮

ঐক্যফ্রণ্টের প্রথম দাবীর ক্রিটিক্যাল রীডিং খালেদা জিয়ার মুক্তি না মুক্তির নিশ্চয়তা?

ডঃ কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নবগঠিত 'জাতীয় ঐক্যফ্রণ্ট' নামের রাজনৈতিক জোট কি খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়? তাদের ৭-দফা দাবী প্রথম দফাতে এ-বিষয়ে যা বলা হয়েছে, তার ক্রিটিক্যাল রীডিং বা সূক্ষ্মপাঠ করা যেতে পারে। দাবীটি নিম্নরূপঃ

"অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের পদত্যাগ, জাতীয় সংসদ বাতিল, সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার নিশ্চিত করতে হবে।"

বাংলাভাষায় 'ডবল প্লুর‍্যাল' বা দ্বি-বহুবচন হয় না বিধায়, "সকলের" পর "রাজবন্দিদের" বলা ঐক্যফ্রণ্টের দাবী প্রণেতা তথা নেতাদের ভাষাগত মূর্খতার পরিচয়ক বটে। আর, একইভাবে যদি, আমরা "প্রত্যাহার" শব্দের পর "নিশ্চিত" শব্দের যোগকে তাদের মূর্খতা মনে করি, আমার আর কিছু বলার থাকে না; কিন্তু 'নিশ্চিত' শব্দটি ব্যাকরণগত ত্রুটি নয় বলে বিশ্লেষণের দাবী রাখে।

নির্বাচনের লক্ষ্যে 'খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীর মুক্তি দিতে হবে' দাবী হলে এর পূরণের অর্থঃ নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়া ও সকল রাজবন্দী মুক্তি পাবেন।

কিন্তু যদি মুক্তি "দিতে হবে" না বলে "নিশ্চিত করতে হবে" দাবী হয়, তার একটি অর্থ হতে পারে, তিনি মুক্তি পাবেন বলে নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। বলাই বাহুল্য, একটি কর্মের সম্পাদন আর নিশ্চয়তা প্রদান এক বিষয় নয়। সম্পাদনের দাবী পূরণ হচ্ছে নগদ, আর নিশ্চয়তার দাবী হচ্ছে বাকী।

বিষয়টি তো এমন নয় যে, খালেদা জিয়া বন্দিনী থাকবেন, তবে তার মুক্তি দেওয়া হবে মর্মে ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন করা হবে? এমন ভাবনা কি অমূলক?

ব্যবহারিকভাবে, খালেদা জিয়া যদি মুক্তি পান, ঐক্যফ্রণ্টে কামাল হোসেনের অবস্থান কী হবে? কামাল হোসেনের নেতৃত্ব কি খালেদা জিয়া এই ঐক্যফ্রণ্টে ফিট হতে পারবেন?

পাঠক তথা বাংলাদেশের রাজনৈতিক দাবী, লক্ষ্য, কর্মসূচি-সহ সমস্ত বুলির যে সরল-সহজ শ্রোতা-পাঠক-ভোক্তা আছেন, তাদেরকে ক্রিটিক্যাল লিসেনিং বা সূক্ষ্মশ্রবণ, ক্রিটিক্যাল রীডিং বা সূক্ষ্মপাঠ ও ক্রিটিক্যাল থিংকিং বা সূক্ষ্মচিন্তা করতে অভ্যস্ত হতে হবে।


EmoticonEmoticon