স্বার্থের বাইরে আদর্শ বলে কিছু নেই। স্বার্থের কথা উহ্য রেখে আদর্শের কথা বলা হয় মানুষকে ঠকাবার জন্যে।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইসলামিক চেতনা উভয় এর ধারকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট। এরা পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়ে স্বার্থের দ্বন্দ্বে। ২০১৩ সালে এই দুই চেতনার প্রতিভূরা পরস্পরের স্বার্থের দ্বন্দ্বে লড়ছিলো। আজ ২০১৮ সালে এরা স্বার্থের দ্বন্দ্ব ঘুচিয়ে একে অপরের কাছে এসেছে।
শেখ হাসিনা ডাষ্টবিনের ফেলে দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। কারণ, তাঁর বিবেচনায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীদের চেয়ে ইসলামিক চেতনাধারীদের সংখ্যা ও ভৌট বেশি, এবং বিরুদ্ধে গেলে যন্ত্রণা দেওয়ার ক্ষমতাও তাদের বেশি। তাই, তাদের খুব প্রয়োজন তাঁর।
আহমদ শফীও তাঁর ইসলামী চেতনা পরিত্যাগ করে, পারলৌকিক অর্জন নয়, বরং ইহলৌকিক অর্জনের স্বার্থে ১০ লক্ষ মানুষের জমায়েত করে আজ শুকরিয়া জানাচ্ছেন ক্ষমতাধর শেখ হাসিনাকে - আল্লাহকে নয়। অর্থাৎ, শফি সাহেবের কাছে সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র নয়, সমস্ত প্রশংসা শেখ হাসিনার।
কোথায় সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী ও ফিল্টার আবিস্কারক মুহম্মদ জাফর ইকবাল? আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারীদের কোনো অসুবিধাই হচ্ছে না ২০১৩ সালে রাজাকার ও স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত শক্তির দ্বারা তাদের চেতনার প্রতিভূ শেখ হাসিনাকে সংবর্ধিত হতে দেখে।
কোথায় সে শ্রেণী-জিহাদের চেতনাধারী তথাকথতিক রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার? আজ আল্লাহ্র নামে জানকুরবানকারী ইসলামী চেতনাধারী তথাকথিত মজলুমদের কোনোই অসুবিধা হচ্ছে না সমস্ত প্রশংসার মালিক আল্লাহ্ বলার পরিবর্তে ২০১৩ সালে তাদের চোখে জালিম চিহ্নিত শেখ হাসিনার প্রতি শুকরিয়া প্রকাশে।
তাই বলি, হে পাবলিক বোনা-ভাই, আদর্শ বলে এই বিশ্বে কিছুই নেই; আছে স্বার্থবোধ এবং সেই স্বার্থ অর্জনের জন্যে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতার বিজ্ঞান ও শিল্প। এমনকি জাতিরও আছে স্বার্থবোধ, যাকে আমরা বলি জাতীয় স্বার্থ বা জনস্বার্থ, যা দেশের সকল মানুষের ন্যুনতম অভিন্ন স্বার্থ।
আমাদের বুঝতে হবে, এই ন্যুনতম অভিন্ন জনস্বার্থ বা জাতীয় স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েই আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারী ও ইসলামিক চেতনাধারীরা নিজ-নিজ স্বার্থ যথাসম্ভব সর্বোচ্চ মাত্রায় অর্জনের জন্যে পরস্পরের কাছে এসেছে এবং পরস্পরের প্রতি শুকরিয়া প্রকাশ করছে।
আশাকরি এক্ষণে পাঠকগণ বুঝতে পারবেন কেনো আমি একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ফেরিওয়ালা জাফর ইকবাল ও ইসলামী চেতনার ফেরিওয়ালা ফরহাদ মজহারের ভণ্ড বুদ্ধিবৃত্তির বিরোধিতা করি এবং তাদেরকে পরিত্যাজ্য মনে করি ।
EmoticonEmoticon