রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮

ঈশ্বর ও দেবতারা কি বাংলা বুঝেন না?

যে-বাঙালী মুসলমান এক গেলাস পানিও আরবিতে চেয়ে খেতে পারেন না, তিনি কিন্তু আল্লাহ্‌র উদ্দেশে নামাজ পড়ে আরবিতে। কেনো, আল্লাহ্‌ কি বাংলা বুঝতে পারেন না?

বাঙালী মুসলমান কবি গোলাম মোস্তফা কুরআনের সুরা ফাতিহার অনুবাদ করেছিলনে এভাবেঃ

"অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি
বিচার দিনের স্বামী।
যত গুণগান হে চির মহান
তোমারি অন্তর্যামী।

দ্যুলোক-ভূলোক সবারে ছাড়িয়া
তোমারি চরণে পড়ি লুটাইয়া
তোমারি সকাশে যাচি হে শকতি
তোমারি করুণাকামী।

সরল সঠিক পূণ্যপন্থা
মোদের দাও গো বলি
চালাও সে পথে যে পথে তোমার
প্রিয়জন গেছে চলি।

যে-পথে তোমার চির-অভিশাপ
যে-পথে ভ্রান্তি, চির-পরিতাপ
হে মহাচালক, মোদের কখনও
করো না সে পথগামী।"

শুধু বাঙালী মুসলমান কবি নন, বাঙালী হিন্দু কবি সত্যন্দ্রনাথ দত্তও কুরআনের সুরা দোহা পড়ে মুগ্ধ হয়ে আরবি থেকে অনুবাদ করে বাংলায় লিখেছিলনেঃ 

"মধ্যদিনের আলোর দোহাই,
নিশার দোহাই ওরে
প্রভু তোরে ছেড়ে যাননি কখন
ঘৃ্ণা না করেন তোরে।

অতীতের চেয়ে নিশ্চয় ভালো
হবে রে ভবিষ্যৎ,
একদিন খুশী হবি তুই লভি
তার কৃপা সুমহৎ.

অসহায় যবে আসিলি জগতে
তিনি দিয়াছেন ঠাঁই-
তৃষ্ণা ও ক্ষুধা দুঃখ যা ছিল
ঘুচায়ে দেছেন তাই।

পথ ভুলেছিলি তিনি সুপথ
দেখায়ে দেছেন তোরে,
সে কৃপার কথা স্মরণে রাখিস;
অসহায় জনে ওরে

দলিস না কভু ভিখারি আতুর
বিমুখ যেন না হয়
তার করুণার বারতা ঘোষণা
করবে দুনিয়াময়।"

যে-দূর্গাদেবীকে বাঙালী হিন্দুর মা বলে দাবী করা হয়, সেই দেবীর পূজার মন্ত্রপাঠ বাংলায় না হয়ে সংস্কৃতে হয় কেনো? দূর্গা কি বাংলা বুঝেন না? কেনো পাঠ করতে হবে সংস্কৃতে নিম্নলিখিতভাবে?

"ইয়া দেবী সর্বভূতেষু ক্ষান্তিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।
ইয়া দেবী সর্বভূতেষু জাতিরূপেণ সংস্থিতা।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।...

... ইন্দ্রিয়ানামধিষ্ঠাত্রী ভূতানাং চাখিলেষু ইয়া
ভূতেষু সততং তসৈ ব্যাপ্তৈ দেব্যৈ নমো নমঃ।।
চিতিরূপেণ ইয়া কৃৎস্নমেতদ্‌ ব্যাপ্য স্থিতা জগত।
নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ।।"
(সংক্ষেপিত)


EmoticonEmoticon