পাকিস্তানীরা তুলনামূলকভাবে হিংস্র। আর হিংস্রতা যুদ্ধ জয়ের সহায়ক। পাকিস্তান জিতবে।
কিন্তু হিংস্রতা তাদের বাংলাদেশে কার্যকর হয়নি। প্রতিশোধে দুর্ধর্ষ হয়ে উঠেছিল বাঙালি। লজ্জাজনকভাবে হেরেছিল পাকিস্তান। তবে বাংলাদেশের ভারত ছিল, ভারতের কে আছে?
তবে দু'একটা ব্যতিক্রম ছাড়া পাকিস্তানের তুলনায় প্রায় সব সেক্টরে ভারত এগিয়ে। ভারতের অস্ত্র বেশি, সৈন্য বেশি, অর্থ বেশি, জনগণ অধিক। সুতরাং এদিক দিয়ে ধরে নেয়া যায় ভারত জিতবে।
কিন্তু তবুও ভারত জিতবে না কারণ প্রথম পারমাণবিক বোমাটি মারবে পাকিস্তান। এবং সেটা বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত মারতেই থাকবে। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার সবরকম মানসিকতা পাকিস্তানের আছে। এবং তারা জানে এটা ছাড়া তাদের বিজয়ের সম্ভাবনাও ক্ষীণ।
পারমাণবিক বোমা ব্যবহার করার জন্য যতটা খারাপ হওয়া লাগবে, পাকিস্তান বহু আগে থেকেই তারচেয়ে অনেক বেশি খারাপ।
জাপানের আমেরিকার পার্ল হারবারে সফল হামলার ফলাফল হিরোশিমা, নাগাশাকিতে লিটল ফ্যাট আর লিটল জন। আমেরিকা খারাপ হয়েছিল , তাই পেরেছিল। পাকিস্তানের কিসের দ্বিধা? ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র আছে, বেশি পরিমাণেই আছে। কিন্তু সেটা কারণ ছাড়া ব্যবহারের জন্য যে হটকারিতা আবশ্যক তা ভারতের নেই। মানবিক চিন্তা এক্ষেত্রে ভারতকে পেছনে ফেলবে। আর জিতবে পাকিস্তান।
কিন্তু ভারত বোধহয় পাকিস্তানের এই মনোভাব ও দৈন্যতা জানে। তাই বিবেচনা করার সময় হয়তো এতটা দীর্ঘ নাও হতে পারে। ভারত হয়তো তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখাতে সক্ষম থাকবে কিংবা আগেই তা করে ফেলতে পারে যা তার প্রতিপক্ষের করার সম্ভাবনা আছে। আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়া মাত্রই আক্রমণ। সেক্ষেত্রে ভারতের বিজয় অবশম্ভাবী।
ভারত বিজয়ের সম্ভাবনা দেখছে, তাই জনগণের কিছু অংশ চায়, যুদ্ধ লাগুক। এই জনগণ তিন ধরনের : ১. রোমান্টিক গাধা, ২. সাম্প্রদায়িক এবং ৩. পাকিস্তান ও ইসলামের কাছ থেকে আঘাতপ্রাপ্ত। এইসব জনগোষ্ঠীর পূর্ণ সহযোগিতা পাবে ভারত। এবং যুদ্ধ লেগে গেলে বাকী জনগণও বিভিন্ন কারণে এর বিরোধিতা না করে পক্ষপাতিত্ব করবে।
অপরদিকে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে এমনিতেই নৈতিক দিক দিয়ে দুর্বল থাকবে পাকিস্তান । আর বিচ্ছিন্ন
হওয়ার চেষ্টারত গোষ্ঠীগুলো ভারতের পক্ষে চলে যেতে পারে। আর এভাবে ত্বরান্বিত হতে পারে পাকিস্তানের পরাজয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তান ঘোষণা দিয়েছিল যে তারা শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়বে। কিন্তু খুবই দ্রুত তারা আত্মসমর্পণ করেছিল। এবং টাইগার নিয়াজি বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল ভারতীয় জেনারেলদের।
তবুও পাকিস্তানের থাকবে ইসলামী কার্ড। ভারত এটিকে ধর্মযুদ্ধে রূপ দেবে না, কিন্তু পাকিস্তান প্রথম থেকেই বলবে ভারত ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
জনগণ ভারতের বেশি। এটা পজিটিভ। কিন্তু এক্ষেত্রে আনুপাতিক হারে পাকিস্তানি জনগণেরই যুদ্ধে অংশগ্রহণ বেশি থাকবে। কারণ তাদের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে যাবে বখতিয়ারের ঘোড়া। ইসলাম তাদের জেহাদি করে তুলবে।
যদি পারমাণবিক বোমার ব্যবহার না হয় তবে এই যুদ্ধ চলবে দীর্ঘদিন ধরে। আর দীর্ঘকাল যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার রসদ পাকিস্তানের নেই। সেক্ষেত্রে হারবে পাকিস্তান।
কিন্তু পাকিস্তানের সঙ্গে থাকবে আরব দেশগুলো। থাকবে চিন। হয়তো আমেরিকাও থাকবে। এবং কিছু দেশ চাইবে যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক। সেক্ষেত্রে সুবিধা পাবে পাকিস্তান। রসদের অভাব হবে না।
অন্যদিকে বাংলাদেশের বিশাল মুসলিম গোষ্ঠী সরাসরি পাকিস্তানের স্বপক্ষে যুদ্ধ করতে চলে যাবে। করবে আর্থিক সহযোগিতা। এটাও পাকিস্তানের জন্য একটা অনুকূল দিক।
কিন্তু ভারতেরও তৈরি হয়েছে গেরুয়া বাহিনী। ঘৃণা, হিন্দু সংস্কৃতি প্রেম এবং পরিশোধ পরায়ণতা তাদের বৈশিষ্ট্য। তারা সরাসরি যুদ্ধে যোগ দেবে। তাদের প্রতিজ্ঞা, ভারতমাতার সম্ভ্রমহানি হতে আর দেবে না তারা। বিপুল হিন্দুত্ববাদীদের এই সহায়তায় অবশ্যই ভারত উদ্দীপনা পাবে।
তাহলে জিতবে কে?
কেউ জিতবে না। হারবে দুপক্ষই।
কেউ কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কেউ বেশি।
পাকিস্তান রাষ্ট্র নিঃচিহ্ন হয়ে যেতে পারে, ভারত হয়ে উঠতে পারে আরও ভৌগোলিক বিভক্ত।
দুর্ভিক্ষ, নারী ও শিশুর লাশ, অরাজকতায় ছেয়ে যাবে দুইদেশ।
গৃহযুদ্ধও হবে, কম অথবা বেশি। সেটা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনাও বিশাল।
হ্যাঁ, ভাল যুদ্ধ বলে কিছু নেই, খারাপ শান্তিও কিছু হয় না।
আমাদের নানী আগেই বলে দিয়েছেন , যুদ্ধের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা আর বেশ্যার মধ্যে ভার্জিনিটি খোঁজা সমান কথা।
EmoticonEmoticon