সামনে ডাকসু নির্বাচন। আমাদের দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা নাই বললেই সারে। অতীতের কিছু নির্বাচন এবং বর্তমানে যে নির্বাচন আমরা দেখি সেখানে ক্ষমতাসীনদের সমর্থিত প্রার্থী তাদের ইচ্ছায় বিজয়ী হয়। জনগণের ভোট দেওয়ার সুযোগ সেখানে সীমিত করা হয়েছে। এর মধ্যে দীর্ঘদিন পর ডাকসু নির্বাচন মনে হচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে না বা হওয়ার সুযোগ কম। তারপর বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। ডাকসু একবার কলঙ্কের অধ্যায় রচনা করেছিল ১৯৭৩ সালে। যেখানে জাসদ ছাত্রলীগের নিশ্চিত বিজয় জেনে ছাত্রলীগ এবং ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ প্যানেল ব্যালট বাক্স ছিনতাই করেছিল। কলঙ্কিত করেছিল ডাকসুকে। ছাত্রলীগ আগেরচেয়ে এখন আরো বেশি দুর্ধর্ষ মারমুখী ক্ষমতালিপ্সু। ফলে অন্যান্য সংগঠন সেখানে কতটুকু সুযোগ পাবে চিন্তার বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের আজ্ঞাবহ দাস। আবার ছাত্রলীগের একক দখলদারিত্ব আছে ছাত্রাবাস এবং ক্যাম্পাসে। কোটাবিরোধী আন্দোলনে এরা সাধারণ ছাত্রদের উপর মারমুখী ছিল। এখন কতটা সভ্য আচরণ করে দেখার বিষয়?
অতীতের ডাকসু নির্বাচন ছাত্রলীগের জন্য কোন ভাল সুখবর ছিল না। তারা বার বার ছাত্র ইউনিয়ন পরে জাসদ ছাত্রলীগ এবং পরে বাসদ ছাত্রলীগ( ছাত্রফ্রন্টের) কাছে পরাজিত হয়েছে। সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের প্রার্থী ছিলেন সুলতান মনসুর। তিনি ছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশে ছাত্রলীগের কোন ভিপি নির্বাচিত হন নাই। আবার বাম ছাত্র সংগঠনগুলো আগের চেয়ে শক্তি ক্রয় হয়েছে। ফলে আজকের ডাকসু কেমন হবে তা জানা নেই?
আমি ব্যক্তিগতভাবে বাম ছাত্র সংগঠনের জোট প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্রঐক্যের প্যানেলে লিটন-ফয়সল-সাদিক পরিষদকে সমর্থন করি। যদি নিরপেক্ষ ভোট হওয়ার সুযোগ হয় তবে এদের কেউ কেউ নির্বাচিত হয়ে আসবেন আমার বিশ্বাস। তবে তা হওয়ার বাস্তবতা দেখছি না। যদি ব্যাপক কারচুপি আর রাতের আধারে ব্যালটবাক্স ভর্তির চক্রান্ত চলে তবে ঢাবির ছাত্র সমাজের প্রতি আহবান আপনারা প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রের পূর্নোদ্বার ডাকসু দিয়েই শুরু হোক। সকল ডাকসু ভোটার ভোট দিতে যান। আপনার পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করুন। লিটন-ফয়সল-সাদিক পরিষদের প্রতি শুভকামনা।
EmoticonEmoticon