ফজরের নামাজ মুনাজাত শেষে ডান পাশের গাঙ কিনারে তাকাতেই নৌকার মাঝি ভূত দেখার মত চমকে উঠলো৷ কালো পাড়ে সাদা শাড়ি পরা, একটি পুটলি হাতে দাড়িয়ে আছে ভর যৌবনা এক নারী! এই বেয়ানে এই মাইয়া আসলো কোথা থেকে!
মাঝি হাঁক ছেড়ে বলে উঠে, ঐ মাইয়া কেডা তুমি? এই বেয়ানে কোথা থেকে আসলা? কোন বাড়ির মাইয়া তুমি? নাকি বউ? দেইখা তো চেনা চেনা লাগেনা!
যাইবা কই?
ইতি আঁচলের পাড় টেনে দুই দাঁতের মাঝে চেপে ধরে, চেষ্টা করে মুখের একপাশ ঢেকে দিতে ৷ গাঙের পাড়ের ঢালু বেয়ে নেমে নৌকার কাছে এগিয়ে যায়৷ বলে, মাঝি ভাই আমি খুব বিপদে পড়ছি৷ আমারে একটু ঐ কান্দিতে নামাই দিবেন?
:কোন কান্দি যাইবা? আর কী বিপদে পড়ছো?
:আমার বাপের খুব অসুখ৷কাইল রাইতে খবর পাইছি৷ আমি কালামৃধা কান্দি যাবো৷
:সে কান্দি তো মেলা দূর৷ একজন নিয়া গেলে আমার পোষাবে না৷
:মাঝি ভাই চলেন, আমি আপ্নেরে দুইজনের ভাড়া দিমু ৷
মাঝি আমতা আমতা করতে করতে বলে আইচ্ছা উঠো৷
ইতি বার বার হেঁটে আসা পথের দিকে তাকাচ্ছে৷ আর একটা ভয় আঁকড়ে ধরেছে৷ গাঙ পাড়টা ছেড়ে কিছু দূর যেতে পারলেই যেনো ইতি হাফ ছেড়ে বাঁচে ৷
এতক্ষণ ইতি মাঝিরে যা যা বলেছে সবই মিথ্যা কথা!
মিথ্যা না কয়ে ইতির উপায় কী? সত্য কইলে নদী পাড় তো দূরের কথা, মাঝি ইতিরে নৌকায় ও তুলতো না ৷
মাঝি আপন মনে গুনগুন করে নৌকা চালাচ্ছে৷ মাঝে মাঝে ইতিকে দু একটা প্রশ্ন করছে ৷ ইতি সত্য মিথ্যা মিশ্রিত উত্তর দিচ্ছে অবলিলায় ৷
ইতির খুব ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কাঁদতে৷ কিন্তু পারছেনা৷ গলা জড়িয়ে আসছে৷ দু চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো৷ আঁচলে চোখ মুছলো ৷
ইতি প্রত্যাশা করছে যদি গন্তব্যহীন ভাবে এই নৌকা চলতো, তাহলে বেশ হত ৷ যন্ত্রনাগুলো নদীর হাওয়ায় মিশে যেতো৷ বারংবার পানি স্পর্শে শরীরের পাপবোধও ধুয়ে যেতো একটু একটু করে! ইতি নৌকার ছই'র দিকে ঘুরে ঘুরে তাকালো৷ মনটা আনমনা হয়ে স্মৃতির গহীনে হারিয়ে গেলো৷ এই স্মৃতিগুলো একটা সময় ইতিকে আনন্দ দিতো৷ শিহরিত করে তুলতো৷ এখন স্মৃতিগুলো মনে হলেই পাপবোধ বাড়ে, শরীরের প্রতি ঘিন ঘিন লাগেএমন এক নৌকায় এক রাতে ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে দেহ খেলায় মগ্ন হয়েছিলো ইতি৷ একবার না৷ এরপর সে খেলার ডাকে বার বার রাতের আঁধারে চুপিচুপি ঘর ছেড়েছে ইতি৷ তখন ইতি পাপ পূণ্যের বিবেচনা বোধ হারিয়ে ফেলেছিলো৷ এই খেলার মধ্যেই পেয়েছিলো স্বর্গের খোঁজ ৷
সেই খেলা'ই কাল হয়ে দাড়ালো ইতির জীবনে৷ হঠাৎ করেই অন্ধকার নেমে এলো সে ভালোবাসার স্বর্গে!
ইতি তখন ক্লাস নাইনে পড়ে ৷ স্কুলে যাতায়াতের পথেই রোজ দেখা হতো জাহিদের সঙ্গে ৷ কথা হতো৷ ভালো লাগা৷ প্রেম৷
রোজ চিঠি আদান-প্রদান৷ এভাবেই চলে গেলো কয়েক'মাস৷
জাহিদ জানালো সে ইতিকে ঘনিষ্ঠ ভাবে পেতে চায়৷ ইতি ভয় পেলো৷ তবুও জানতে চাইলো সেটা কীভাবে সম্ভব?
সে প্লানও জাহিদের পূর্বেই করা ছিলো ৷ নৌকা নিয়ে রাতে ইতিদের বাড়ির ঘাটে অপেক্ষা করবে ৷ সময় অনুযায়ী ইতি শুধু বেরিয়ে আসবে৷ ইতির জন্য এটা খুব কঠিণ ছিলো, তবুও সে জানালো জাহিদের জন্য সে সব করতে পারবে ৷
এভাবেই শুরু হয় প্রেম লীলা৷ রাতের আঁধারে করলেই কী সব কিছু আঁধারেই চাপা থাকে! থাকেনা৷ দিনের আলোতেও তা বেরিয়ে আসে স্পষ্ট ভাবে৷
দু মাস যেতেই বিপাকে পড়ে ইতি৷ মাথা ঘোরা৷ বমি হওয়া৷ খেতে না পারায় অসুস্থ হয়ে পড়ে ৷ জাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার মতও অবস্থা নেই ইতির ৷ বাড়ির লোকজনও সন্দেহের চোখে দেখতে থাকে ইতিকে ৷
পাশের বাড়ির এক দাই তো লোকালয়ে বলেই বসলো তোমার মাইয়ার মতিগতি ভালো দেখতেছিনা৷ মাইয়ারে জিগাও অকাম কার লগে করছে! কার পাপ পেটে বাঁধাইছে!
আকাশ ভেঙ্গে পড়লো ইতির পরিবারের উপর৷ মাইয়া এমন নষ্ট কেমনে হইলো? কবে হইলো? গ্রামে এখন মুখ দেখামু কেমনে? মাইনসে তো মুখে থু থু দিবে ৷
ইতির বাপ হুঙ্কার দিয়ে ইতির মাকে ডাকে, বলে তোর নষ্টা মাইয়ারে কী করবি কর ৷ লবন খাওয়াইয়া মাইরা ফেলা ৷ নয়ত গলায় দড়ি দিতে বল৷ বিষ খাইতে বল৷ আমার সামনে যেনো তোর মাইয়ারে না দেখি ৷
ইতির ভাই ইতিকে প্রচুর মারলো৷ পেটে লাত্থাইলো৷ তবুও ইতির মুখ থেকে কোনো কথা বের করতে পারলো না ৷
দাইরে দিয়া গাছড়া ওষুধ আনালো৷জোর করে হাত পা বেঁধে ইতিকে খাওয়ালো৷ তবুও কাজ হলো না ৷
জ্ঞানহীন অবস্থায় কাটলো ইতির আরো দুটো দিন৷ এরপর ইতি আর সইতে না পেরে জাহিদের কথা বলে দেয় পরিবাররের কাছে বেঁকে বসলো জাহিদ ৷ সে অস্বীকার করলো, এ সব মিথ্যে৷ ও সন্তান তার নয় ৷ ইতির বাপ ভাই ছুটে গেলো মেম্বর, চেয়ারম্যানের কাছে ৷ গ্রামে সালিশ বসলো৷ জাহিদের বাবার নাম ডাক অনেক ৷ অনেক টাকা পয়সার মালিক ৷ সে চেয়ারম্যানকে চাইছিলো টাকা দিয়েই নিজ পক্ষে সায় দেয়াতে৷
চেয়ারম্যানকে এলাকার সবাই খুব সম্মান করে ৷ ভালো মানুষ একজন৷ তার বিচার ন্যায়ের পক্ষেই থাকবে সে কথা গ্রামবাসী জানে৷
সেদিনই সেই সালিশে বসেই কাজী ডেকে বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হয় ইতি আর জাহিদের ৷
ইতি সেদিনই জাহিদের বাড়ি চলে যায় ৷
ভালোবাসা যখন শুধু দেহ কেন্দ্রিক হয়—লালসা কেটে গেলে তা নির্মমতায় রুপ নেয় ৷
যাইবা কই?
ইতি আঁচলের পাড় টেনে দুই দাঁতের মাঝে চেপে ধরে, চেষ্টা করে মুখের একপাশ ঢেকে দিতে ৷ গাঙের পাড়ের ঢালু বেয়ে নেমে নৌকার কাছে এগিয়ে যায়৷ বলে, মাঝি ভাই আমি খুব বিপদে পড়ছি৷ আমারে একটু ঐ কান্দিতে নামাই দিবেন?
:কোন কান্দি যাইবা? আর কী বিপদে পড়ছো?
:আমার বাপের খুব অসুখ৷কাইল রাইতে খবর পাইছি৷ আমি কালামৃধা কান্দি যাবো৷
:সে কান্দি তো মেলা দূর৷ একজন নিয়া গেলে আমার পোষাবে না৷
:মাঝি ভাই চলেন, আমি আপ্নেরে দুইজনের ভাড়া দিমু ৷
মাঝি আমতা আমতা করতে করতে বলে আইচ্ছা উঠো৷
ইতি বার বার হেঁটে আসা পথের দিকে তাকাচ্ছে৷ আর একটা ভয় আঁকড়ে ধরেছে৷ গাঙ পাড়টা ছেড়ে কিছু দূর যেতে পারলেই যেনো ইতি হাফ ছেড়ে বাঁচে ৷
এতক্ষণ ইতি মাঝিরে যা যা বলেছে সবই মিথ্যা কথা!
মিথ্যা না কয়ে ইতির উপায় কী? সত্য কইলে নদী পাড় তো দূরের কথা, মাঝি ইতিরে নৌকায় ও তুলতো না ৷
মাঝি আপন মনে গুনগুন করে নৌকা চালাচ্ছে৷ মাঝে মাঝে ইতিকে দু একটা প্রশ্ন করছে ৷ ইতি সত্য মিথ্যা মিশ্রিত উত্তর দিচ্ছে অবলিলায় ৷
ইতির খুব ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কাঁদতে৷ কিন্তু পারছেনা৷ গলা জড়িয়ে আসছে৷ দু চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো৷ আঁচলে চোখ মুছলো ৷
ইতি প্রত্যাশা করছে যদি গন্তব্যহীন ভাবে এই নৌকা চলতো, তাহলে বেশ হত ৷ যন্ত্রনাগুলো নদীর হাওয়ায় মিশে যেতো৷ বারংবার পানি স্পর্শে শরীরের পাপবোধও ধুয়ে যেতো একটু একটু করে! ইতি নৌকার ছই'র দিকে ঘুরে ঘুরে তাকালো৷ মনটা আনমনা হয়ে স্মৃতির গহীনে হারিয়ে গেলো৷ এই স্মৃতিগুলো একটা সময় ইতিকে আনন্দ দিতো৷ শিহরিত করে তুলতো৷ এখন স্মৃতিগুলো মনে হলেই পাপবোধ বাড়ে, শরীরের প্রতি ঘিন ঘিন লাগেএমন এক নৌকায় এক রাতে ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে দেহ খেলায় মগ্ন হয়েছিলো ইতি৷ একবার না৷ এরপর সে খেলার ডাকে বার বার রাতের আঁধারে চুপিচুপি ঘর ছেড়েছে ইতি৷ তখন ইতি পাপ পূণ্যের বিবেচনা বোধ হারিয়ে ফেলেছিলো৷ এই খেলার মধ্যেই পেয়েছিলো স্বর্গের খোঁজ ৷
সেই খেলা'ই কাল হয়ে দাড়ালো ইতির জীবনে৷ হঠাৎ করেই অন্ধকার নেমে এলো সে ভালোবাসার স্বর্গে!
ইতি তখন ক্লাস নাইনে পড়ে ৷ স্কুলে যাতায়াতের পথেই রোজ দেখা হতো জাহিদের সঙ্গে ৷ কথা হতো৷ ভালো লাগা৷ প্রেম৷
রোজ চিঠি আদান-প্রদান৷ এভাবেই চলে গেলো কয়েক'মাস৷
জাহিদ জানালো সে ইতিকে ঘনিষ্ঠ ভাবে পেতে চায়৷ ইতি ভয় পেলো৷ তবুও জানতে চাইলো সেটা কীভাবে সম্ভব?
সে প্লানও জাহিদের পূর্বেই করা ছিলো ৷ নৌকা নিয়ে রাতে ইতিদের বাড়ির ঘাটে অপেক্ষা করবে ৷ সময় অনুযায়ী ইতি শুধু বেরিয়ে আসবে৷ ইতির জন্য এটা খুব কঠিণ ছিলো, তবুও সে জানালো জাহিদের জন্য সে সব করতে পারবে ৷
এভাবেই শুরু হয় প্রেম লীলা৷ রাতের আঁধারে করলেই কী সব কিছু আঁধারেই চাপা থাকে! থাকেনা৷ দিনের আলোতেও তা বেরিয়ে আসে স্পষ্ট ভাবে৷
দু মাস যেতেই বিপাকে পড়ে ইতি৷ মাথা ঘোরা৷ বমি হওয়া৷ খেতে না পারায় অসুস্থ হয়ে পড়ে ৷ জাহিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার মতও অবস্থা নেই ইতির ৷ বাড়ির লোকজনও সন্দেহের চোখে দেখতে থাকে ইতিকে ৷
পাশের বাড়ির এক দাই তো লোকালয়ে বলেই বসলো তোমার মাইয়ার মতিগতি ভালো দেখতেছিনা৷ মাইয়ারে জিগাও অকাম কার লগে করছে! কার পাপ পেটে বাঁধাইছে!
আকাশ ভেঙ্গে পড়লো ইতির পরিবারের উপর৷ মাইয়া এমন নষ্ট কেমনে হইলো? কবে হইলো? গ্রামে এখন মুখ দেখামু কেমনে? মাইনসে তো মুখে থু থু দিবে ৷
ইতির বাপ হুঙ্কার দিয়ে ইতির মাকে ডাকে, বলে তোর নষ্টা মাইয়ারে কী করবি কর ৷ লবন খাওয়াইয়া মাইরা ফেলা ৷ নয়ত গলায় দড়ি দিতে বল৷ বিষ খাইতে বল৷ আমার সামনে যেনো তোর মাইয়ারে না দেখি ৷
ইতির ভাই ইতিকে প্রচুর মারলো৷ পেটে লাত্থাইলো৷ তবুও ইতির মুখ থেকে কোনো কথা বের করতে পারলো না ৷
দাইরে দিয়া গাছড়া ওষুধ আনালো৷জোর করে হাত পা বেঁধে ইতিকে খাওয়ালো৷ তবুও কাজ হলো না ৷
জ্ঞানহীন অবস্থায় কাটলো ইতির আরো দুটো দিন৷ এরপর ইতি আর সইতে না পেরে জাহিদের কথা বলে দেয় পরিবাররের কাছে বেঁকে বসলো জাহিদ ৷ সে অস্বীকার করলো, এ সব মিথ্যে৷ ও সন্তান তার নয় ৷ ইতির বাপ ভাই ছুটে গেলো মেম্বর, চেয়ারম্যানের কাছে ৷ গ্রামে সালিশ বসলো৷ জাহিদের বাবার নাম ডাক অনেক ৷ অনেক টাকা পয়সার মালিক ৷ সে চেয়ারম্যানকে চাইছিলো টাকা দিয়েই নিজ পক্ষে সায় দেয়াতে৷
চেয়ারম্যানকে এলাকার সবাই খুব সম্মান করে ৷ ভালো মানুষ একজন৷ তার বিচার ন্যায়ের পক্ষেই থাকবে সে কথা গ্রামবাসী জানে৷
সেদিনই সেই সালিশে বসেই কাজী ডেকে বিয়ে পড়িয়ে দেয়া হয় ইতি আর জাহিদের ৷
ইতি সেদিনই জাহিদের বাড়ি চলে যায় ৷
ভালোবাসা যখন শুধু দেহ কেন্দ্রিক হয়—লালসা কেটে গেলে তা নির্মমতায় রুপ নেয় ৷
ইতির বিশ্বাস করতে
কষ্ট হচ্ছিলো৷ হুট করেই এত কিছু ঘটে গেলো তার জাবনে! হঠাৎ
করেই কেমন সব উলটপালট হয়ে গেলো বিনা
ঝড়েই ৷
আরো কঠিন দিন অপেক্ষা করছিলো ইতির জন্য৷ ইতি তা আঁচও করতে পারেনি ৷ ও বাড়ির প্রতিটি মানুষ কেমন হিংস্র, নির্মম, কঠোর তা প্রতি নিয়ত টের পাচ্ছে ইতি ৷ জাহিদ ও আগের মত নেই ৷ ইতির সঙ্গে কথা বলেনা ৷ এক ঘরে শোয় না ৷
ইতির বাবাও যেনো মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে গা ঝাড়া দিয়ে বেঁচে গেছে ৷ অনেক মাস হয়ে গেছে ইতি এ বাড়িতে এসেছে ৷ অথচ বাপ ভাই বা অন্য কেউ একটা খোঁজ অবধি নেয়নি ইতির ৷
ইতিকে প্রতি মুহুর্তে কাজের মানুষের মত খাটতে হয় এ বাড়িতে ৷ এমন একটা পেট নিয়েও প্রতিটি কাজ করতে হয় ঠিকঠাক মত ৷ইতি বুঝতে পারে এ বাড়িতে তাঁর পরিচয়, ও শুধু কাজের মেয়ে ৷
একদিন গভীর রাতে ইতি প্রসব ব্যথায় চিৎকার করতে থাকে৷ খোদার দোহাই দিয়ে সবাইকে ডাকতে থাকে ৷ কেউ আগায় না ৷ ইতি মরে যাক এমনটাই চাইছে যেনো সবাই ৷ পাশের বাড়ির একজন ছুটে এসে দরজা নেড়ে সবাইকে জাগিয়ে তোলে৷ সবার ভাব এমন ছিলো যে তাঁরা কিছুই টের পায়নি ৷
ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই ইতি একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয় ৷ তবে সে নিষ্পাপ দেহটি নিথর ৷ প্রাণটা ঠিক কখন উড়ে গেছে দায়ীও বলতে পারেনি ৷ অথচ নিথর দেহটি দেখে মনে হচ্ছিলো এই এখনি কেঁদে উঠবে!
ইতি অনেক কষ্টে উঠে বসে৷ দাইর দিকে নির্বাক চোখে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ৷ তারপর বলে, ওরে একটু আমার কোলে উঠিয়ে দেন৷ মরা হইছে বলে কি আমি একটু কোলে নিতে পারুমনা? মরা হইলেও তো ও আমার বাচ্চা! আমি ওর মা ৷ দাই নিশ্চুপে বাচ্চাটি ইতির দুহাতে তুলে দেয় ৷
মৃত বাচ্চা কোলে নিয়েও ইতি বেশ শান্ত ৷ বাচ্চার কপালে চুমু দিলো৷ গালের সঙ্গে গাল ছোঁয়ালো.....
আরো কঠিন দিন অপেক্ষা করছিলো ইতির জন্য৷ ইতি তা আঁচও করতে পারেনি ৷ ও বাড়ির প্রতিটি মানুষ কেমন হিংস্র, নির্মম, কঠোর তা প্রতি নিয়ত টের পাচ্ছে ইতি ৷ জাহিদ ও আগের মত নেই ৷ ইতির সঙ্গে কথা বলেনা ৷ এক ঘরে শোয় না ৷
ইতির বাবাও যেনো মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে গা ঝাড়া দিয়ে বেঁচে গেছে ৷ অনেক মাস হয়ে গেছে ইতি এ বাড়িতে এসেছে ৷ অথচ বাপ ভাই বা অন্য কেউ একটা খোঁজ অবধি নেয়নি ইতির ৷
ইতিকে প্রতি মুহুর্তে কাজের মানুষের মত খাটতে হয় এ বাড়িতে ৷ এমন একটা পেট নিয়েও প্রতিটি কাজ করতে হয় ঠিকঠাক মত ৷ইতি বুঝতে পারে এ বাড়িতে তাঁর পরিচয়, ও শুধু কাজের মেয়ে ৷
একদিন গভীর রাতে ইতি প্রসব ব্যথায় চিৎকার করতে থাকে৷ খোদার দোহাই দিয়ে সবাইকে ডাকতে থাকে ৷ কেউ আগায় না ৷ ইতি মরে যাক এমনটাই চাইছে যেনো সবাই ৷ পাশের বাড়ির একজন ছুটে এসে দরজা নেড়ে সবাইকে জাগিয়ে তোলে৷ সবার ভাব এমন ছিলো যে তাঁরা কিছুই টের পায়নি ৷
ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই ইতি একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয় ৷ তবে সে নিষ্পাপ দেহটি নিথর ৷ প্রাণটা ঠিক কখন উড়ে গেছে দায়ীও বলতে পারেনি ৷ অথচ নিথর দেহটি দেখে মনে হচ্ছিলো এই এখনি কেঁদে উঠবে!
ইতি অনেক কষ্টে উঠে বসে৷ দাইর দিকে নির্বাক চোখে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ৷ তারপর বলে, ওরে একটু আমার কোলে উঠিয়ে দেন৷ মরা হইছে বলে কি আমি একটু কোলে নিতে পারুমনা? মরা হইলেও তো ও আমার বাচ্চা! আমি ওর মা ৷ দাই নিশ্চুপে বাচ্চাটি ইতির দুহাতে তুলে দেয় ৷
মৃত বাচ্চা কোলে নিয়েও ইতি বেশ শান্ত ৷ বাচ্চার কপালে চুমু দিলো৷ গালের সঙ্গে গাল ছোঁয়ালো.....
EmoticonEmoticon