বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০১৯

নারীকে কবে শস্যক্ষেত্র বানানো বন্ধ হবে ?

আধুনিক বিশ্বে নারীবাদ বা নারীমুক্তির বৃহৎ যে আন্দোলনটি সেটা নতুন নয়। এটা অনেক আগেই শুরু হয়েছিলো। বাংলাদেশে যে অল্প পরিসরে তার সুত্রপাত দেখা যায় তা সেই আধুনিক বিশ্বকে অনুসরণ করার ফলাফল। তবে প্রশ্ন একটি থেকেই যায়। আমাদের সমাজ কি নারীদেরকে শস্যক্ষেত্র বানানো বন্ধ করেছে ? আমার মনে হয়না। কারণ এই সমঅধিকারের যাত্রার পথটি আসলে খুব সহজ নয়। এই রাস্তাটির দুইপাশে ঘাপটি মেরে বসে আছে ধর্মীয় সব কুসংস্কার। যা থেকে আমাদের সমাজ মুক্ত হতে পারেনি আজও। আজও আমাদের সমাজ নারী শিশুর থেকে পুরুষ শিশুটির দিকেই ঝুকে থাকে বেশি।

নারীকে হতে হয় নানাভাবে সমাজের কাছে নিগৃহিত। তারা তাদের কর্মক্ষেত্রে উচ্চপদস্থদের দ্বারা যৌন হয়রানীর শিকার হয়, রাস্তা ঘাটে যৌন সন্ত্রাসীর কবলে পড়ে এবং এতোকিছু সহ্য করেও সে বাড়িতে এসে আবার সংসারের কাজ ও বাচ্চা লালন পালনে পারদর্শিতা দেখায়। কুসংস্কারাছন্ন সমাজ ব্যাবস্থা দেখলে মনে হয় এই ধর্মীয় নিয়মকানুন আর বদলাবার নয়। কারণ যেখানে শফি হুজুরদের মতো আগা থেকে মাথা পর্যন্ত মধ্যযুগীয় ধ্যান ধারণায় পূর্ণ ব্যাক্তিরা গলাবাজি করে বলে নারীদের স্কুল কলেজে পাঠাবেন না সেখানে এই ধর্মীয় নিয়ম কানুন বদলিয়েছে এই কথাটি কে বলতে পারে।

আমি বলতে চাচ্ছি শুধু আমাদের মানসিকতার একটু পরিবর্তন করতে হবে, তাহলে আর এই জাতীয় শফি হুজুরেরা আমাদের সমাজের অগ্রগতির যে যাত্রা নারী পুরুষ কাধে কাধ মলিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে শুরু করেছে তা আর থামাতে পারবে। সবার আগে আমাদের অভিভাবকদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। তারা যাতে তাদের ছেলে শিশুটিকে যে চোখে দেখে ঠিক একই চোখে তাদের মেয়ে শিশুটিকেও দেখে। একদিন রাষ্ট্রও সেটা বুঝতে পারবে। মুখে মুখে নারী পুরুষের সমান অধিকার নয় কর্মক্ষেত্রেও তা প্রমাণিত হবে। তখন ধর্মীয় কুসংস্কার দূর হয়ে নারীকে আর দ্বিতীয় শ্রেনীর মানুষ ভাবা হবেনা।

আর এই কাজে কারো উপরে ভরসা করে বসে থাকলে হবেনা। একটি প্রগতিশীল সমাজ গঠনের লক্ষ্যে যেসমস্ত পুরুষেরা নারী অধিকার বাস্তবায়নের কথা বলছে, তাদেরকে তাদের কথা বলতে দেবার প্লাটফর্ম গুলো তৈরি করে দিতে হবে। নারীদের আওয়াজ তুলতে হবে প্রতিটি শফি হুজুরদের বিরুদ্ধে। নারীদের মধ্যে একটি সমস্যা দেখা যায় প্রায়ই। তারা একজন আরেকজনের মতের সাথে প্রায়ই দ্বীমত পোষণ করে এই বৃহৎ আন্দোলনকে মাঝে মধ্যেই বাধাগ্রস্থ করে, তাদেরকে একত্রিত হতে হবে। নারীবাদীদের লক্ষ্য যদি স্থীর না থাকে, টার্গেট যদি একের অধিক হয়ে থাকে তাহলে পথ আরো কঠিন হবে।


EmoticonEmoticon