মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০১৭

এদেশের শিক্ষা !

এদেশে শিক্ষা নিয়ে কত ধরণের এক্সপেরিমেন্ট করা হয় বলা মুশকিল। কয়দিন এক সিস্টেম তারপর এটি ভাল না। নয়া কোন সিস্টেম চালু করা হয়। শিক্ষাকে আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি সমেত দক্ষ মানব সম্পদ গড়ার বদলে বাজার নির্ভর সার্টিফিকেট সর্বস্ব করার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের ঝুরি নেই। শিক্ষা মন্ত্রী নতুন সিস্টেম চালু করার ওস্তাদ। কিন্তু উন্নত শিক্ষা বলতে যা বুঝায় তার ধারে কাছে যেথে পারেন না। শুধুমাত্র শতভাগ পাস করা যেন শিক্ষার উদ্দেশ্য? আর এই ব্রত নিয়েছেন আমাদের মহামান্য শিক্ষা মন্ত্রী নাহিদ সাহেব। সৃজনশীল পদ্ধতির নামে যাচ্ছে তাই  চালু করে যেন গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংসের আয়োজন করছেন। তাঁকে নাকি ' গ্লোবাল এডুকেশন এওয়ার্ড ' দেওয়া হচ্ছে? প্রথমে অবাক হয়েছিলাম ঠিক কী কারণে এত বড় মাপের এওয়ার্ড পেয়ে গেলেন শিক্ষা মন্ত্রী? তিনি শিক্ষার ক্ষতি করা ছাড়া লাভের কাজটা কী করেছেন মাথায় ধরে না। পরে একটু খোঁজ নিয়ে দেখি এই গ্লোবাল এওয়ার্ড দেয় ভারতের একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। এদের এওয়ার্ড তালিকা দেখেতো অবাক হলাম! ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামেও এদের এওয়ার্ড আছে। তাই বুঝতে বাকি রইলো না শিক্ষা মন্ত্রীর এই এওয়ার্ড পাওয়ার পিছনের কারিগর কারা।

১৯৯২ সালে দেশের স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের কলেজগুলোর কোর্স কারিকুলাম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য গড়ে উঠলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নামক শিক্ষা বোর্ড। যারা শুধু পরীক্ষা সিলেবাস সার্টিফিকেট এগুলো দেখভাল করবে। নানা অনিয়ম আর সেশনজট নিয়ে এই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় একটি শিক্ষা বোর্ডে পরিণত হল। কিন্তু শিক্ষার মান উন্নয়নে ভাল কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। সারাদেশে বিশাল সংখ্যক কলেজের ছাত্রছাত্রী নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যখন নাজেহাল অবস্থা তখন প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে ঘোষণা এল কলেজগুলোর নিয়ন্ত্রণ ভার আগের মত বিশ্ববিদ্যালয় করবে। সেই অনুযায়ী প্রথমে ঢাকার সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে নতুন করে আগের মত চেষ্টা। কিন্তু ঘোষণা দিলাম আর কাজ হয়ে গেল? আয়োজন দরকার নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে বাড়তি এই কাজ করবে এর জন্য অতিরিক্ত  লোকবল দেওয়া হয়েছে কি? ফলাফল কী দাঁড়ালো? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঠিকমত পরীক্ষা নিতে পারে না। এখন ছাত্ররা এই নিয়ে আন্দোলনে নামছে। ঠিকমত পরীক্ষা আর একাডেমিক কারিকুলাম তৈরির জন্য। এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আজ শাহবাগে মিছিল  সমাবেশে মিলিত হলে পুলিশ বেধড়ক লাটিচার্য করে, টিয়ারশেল মারে। এতে সিদ্দুকুর নামে এক ছাত্র মারাত্মক আহত  হয়। আরও কয়েকজন আহত হন। সিদ্দিকুরের একটি চোখ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অবস্থা! সিদ্দিকুর তার ছাত্র অধিকার নিয়ে রাজপথে নেমেছিল। তাহলে কোন কারণে আজ এই নিরীহ ছাত্রটি মূল্যবান এই চোখ হারাতে বসেছে। এরাতো আর গদি থেকে আপনাদের নামাতে নামে নাই। নিজেদের শিক্ষার দাবি নিয়ে নেমেছিল। তাহলে আপনাদের পোষা বাহিনী কেন এদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে দিল না? মনে করেছেন লাটির জোরে সব করতে পারবেন? পারবেন না। পাবলিক একদিন বিদ্রোহী হবে। আপনাদের ধ্বংস এবং ক্ষমতার বাহাদুরির পতন অনিবার্য।


EmoticonEmoticon