বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

সজাগ থাকার অনুরোধ রইলো ।

আপনি যদি লুটেরা মিয়ানমার রাষ্ট্রের উগ্র জাতীয়াতাবাদীদের মত উগ্র জাতীয়তাবাদী হন তাহলে নিরাপরাধ বাংলাদেশে বসবাসকারী বৌদ্ধদের সাথে নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন। একটা দেশের উগ্র জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধদের দায় এদেশের বৌদ্ধরা নিতে পারে না। বাংলাদেশে বৌদ্ধধর্মাবলম্বী লোকজন খুবই নিরীহ। প্রায় সব দেশেই জাতিগত বা ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা নিরীহ হয়ে থাকে। যদি না সেই দেশ শতভাগ গণতান্ত্রিক না হয়, তবে ক্ষমতার দাপট বড় জাতি বা বড় ধর্মের লোকের কাছেই থাকে। ফলে সেই কারণে অন্য ধর্মের লোক শক্তির বিচারে অনেকটা পিছনেই থাকে। একারণে অনেক বিষয়ে বড় ধর্মের লোকের সাথে সহসা ঝগড়ায় যায় না। যদিও একটি গণতান্ত্রিক সমাজে সবার সমান অধিকারের কথা বলা হয় কিন্তু তার অস্তিত্ব কোথায় আছে? এখন মিয়ানমারে যারা রোহিঙ্গাদের নির্যাতন করছে এর জন্য আমরা মিয়ানমারের যে সকল লোক এই কর্মে জড়িত তাদেরকে নানা খারাপ বিশেষণে ভূষিত করছি। ওদেরকে উগ্র ফ্যাসিস্ট লুটেরা অমানুষ বলছি। এখন ঠিক একই কাজ যদি বাংলাদেশের মুসলমানরা বা বাঙ্গালীরা করে তাদেরকে কী বিশেষণে ভূষিত করবো? একই নয় কি? তাহলে মিয়ানমারের ফ্যাসিস্ট চরিত্রেই লোকদের সাথে বাংলাদেশের এই উগ্রপন্থী লোকদের পার্থক্য আছে? এরা সবাই উগ্রপন্থী ফ্যাসিস্ট। সে বৌদ্ধ হোক আর মুসলমান হোক। এদেশের যে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোক আছে সে আমাদের ভাই প্রতিবেশী। ফলে তার শতভাগ নিরাপত্তা, চলাফেরা নিশ্চিত করা জরুরী। এখন মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নির্যাতনের দায় আমি এদেশের বসবাসকারী কাউকে চাপাতে পারি না। এটা কী এমন যে অপরাধ করলো আমেরিকার কোন লোক আর তার জন্য শাস্তি পেতে হবে বাংলাদেশের কাউকে? তাহলে একজন মানুষ নিজের অপরাধের দায় নিতে পারে অন্যের নয়; এমনকি পিতা পুত্রের দায় নেয় না আইনের ভাষায়।

যারা এইদেশে বসবাসকারী বৌদ্ধদের উচ্ছেদ বা বিতারণ করে রোহিঙ্গাদের এখানে আশ্রয় দিতে চান এরা মিয়ানমারের জাতীয়তাবাদী উগ্র বৌদ্ধদের মত ফ্যাসিস্ট। ফলে যারাই এই কাজে যুক্ত হবে তাকে প্রতিহত করুণ। জ্ঞান মিত্র ভিক্ষু নামে এক বৌদ্ধ ভিক্ষুকে ভারত থেকে চিকিৎসা শেষে বেনাপোলে আটকিয়ে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়েছে। যেখানে তাঁর সাথে নানা ধরণের অশালীন ভাষায় আচরণ করতে দেখা গেছে। তিনি আবার প্রাণভয়ে ভারত চলে গেছেন। যদিও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। এদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন একটা অজানা আতঙ্কে আছেন যদি উগ্র মুসলমানরা তাঁদের উপর হামলা করে! কারণ এরকম একটি প্রচার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়ে আসছে। এজন্য সকল গণতান্ত্রিক বোধসম্পন্ন লোকজনদের এর বিরোদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ জানাই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সজাগ না থাকলে সাম্প্রদায়িক হামলা হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। চেতনার জোশে এক শ্রেণীর অন্ধ মুসলমানদের কারণে যাতে অন্য সম্প্রদায়ের লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই বিষয়ে সজাগ থাকার অনুরোধ রইলো।


EmoticonEmoticon