জাতিসংঘ যুদ্ধ বন্ধ করতে পারছে না। যুদ্ধ থামানো যাবে বলে যে জাতিসংঘ গঠিত হয়েছিল, তা যে একটা মস্তবড় প্রতারণা, তা আমরা বুঝতে পেরেছি। কীভাবে? আমরা সহজেই দেখতে পেয়েছি যে উক্ত সংঘটি আসলে শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর বাজার তৈরি করছে। এবং আমরা আরো দেখতে পেয়েছি যে কলোনী চালানোর ব্যবস্থাতে জাতিসংঘের ব্যাপক আস্থা ও সমর্থন। ঐ সংস্থাটি যুদ্ধ থামাতে পারেনি ; শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর অন্যায় আধিপত্য কমাতে পারেনি, এবং রাষ্ট্রগুলোর পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি করতে একবারেই সক্ষম হয়নি।
সমস্যাটা তাহলে কোথায়?
মানুষের চরিত্রের মনস্তত্ত্ব উন্মোচন করে সিগমুন্ড ফ্রয়েড দেখিয়েছেন সমস্যা আছে মানুষের ভেতরেরই। তার মানে আমাকে লড়াই করতে হবে নিজেরই বিরুদ্ধে। ফ্রয়েড একটা পথ দেখিয়ে বলেছেন, মানুষের চেতনায় যে ইগো আছে তা যদি সুপার ইগো হয়ে শক্তিশালী হয় তাহলেই বিশ্বব্যাপী সম্প্রীতি বাড়বে। তাই কী?
তাই যদি হয়, শুধু ধারণাকেই মেনে নেব? মানুষের সুপার ইগো অর্থাৎ কল্যাণ নীতি আদর্শ কেন তবে জাতিসংঘের মাধ্যমে উন্নত করা যায়নি? আর ব্যক্তি চরিত্রের ক্ষেত্রে যা কার্যকর তা কি রাষ্ট্রীয় চরিত্রের ক্ষেত্রেও কার্যকর?
ইতিহাস কিন্তু তা বলছে না! হাজার বছর ধরে তথাকথিত পবিত্র ধর্মগুলো প্রলোভন ও ভয় দেখিয়েও মানুষের অন্তরের কোন পরিবর্তন করতে পারেনি। পারেনি মানুষের আত্মদংশন বৃদ্ধি করতে। ইগো রূপান্তরিত হয়নি সুপার ইগোতে। মানুষের ইচ্ছা -অনিচ্ছা যে মূলত প্রবৃত্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত তা আমরা ভুলে যেতে চাচ্ছি কেন? প্রবৃত্তির তাড়নার কাছে মানুষ আসলে অসহায়। নীতি আসলে একটা মুখোশ, যা চরিত্রের উপর প্রলেপ মাত্র। লোভ হিংসা প্রতিহিংসাকে কতদূর পর্যন্ত থামানো যায়? আর আমরা মানুষেরা এতটাই বদমাশ যে নিজেরা নীতি মানি না অথচ পরবর্তী প্রজন্মের উপর সেই নীতিকেই চাপিয়ে দিই। এই ককেশিয়ান দুষ্টচক্রই মানুষের ইতিহাস।
তাহলে কী করব আমরা?
মুক্তির পথ কি নাই?
আমরা কি এমন অর্থনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে পারি না যেখানে সুপার ইগো কার্যকরী হয় ?আর এমন একটা রাষ্ট্রীয় পাহারার ব্যবস্থা করতে পারিনা কি যেখানে আমরা আচরণে গ্লানিমুক্ত থাকতে পারি?
ব্যক্তির জন্য সমাজ নয়, সমাজের জন্য ব্যক্তি এই আদর্শই পারে সেই ব্যবস্থা উপহার দিতে। মানবজাতির কল্যাণের মাধ্যমেই হোক ব্যক্তির কল্যাণ। সমাজই আমাদের দৃশ্যমান ঈশ্বর। কিন্তু সেই ঈশ্বরও বন্দীত্ব বরণ করেছে পূঁজির - ধর্মের।এই সমাজনামক ঈশ্বরের মুক্তির জন্য সম্মিলিত প্রয়াসের কোন বিকল্প আছে কি?
আমরা আমাদের শ্রমিক নারীটিকে সমঅধিকার, সমমর্যাদা দিতে চাই।
আমরা প্রত্যেকে সমান খাবার খেতে চাই।
চাই
চাই!
হৃদয়বানরা এগিয়ে গেছে সাম্যের মিছিলে।
ভিক্ষা নয়, দান নয়, সাহায্য নয় অধিকার চাই। এবং দিতেও চাই অধিকার।
চলছে সমবেতভাবে পরিকল্পিতভাবে এবং সচেতনভাবে মুক্তির যুদ্ধ।
বন্ধু , কিচ্ছু করার নেই!
অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং হৃদয়ঘটিত কারণেই
বামে হেলে আছি।
EmoticonEmoticon