বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭

রোহিঙ্গা পূর্বপুরুষ'দের ৩'টি ঐতিহাসিক ভুল !

★ ১ম ভুল ||

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রোহিঙ্গারা সমর্থন করেছিল জাপানীদের। আর পুরো মায়ানমারের জনসমর্থন ছিল ব্রিটিশদের প্রতি। সে যুদ্ধে জিতেছিল জাপান। কিন্তু জাপান যখন চলে যায় রোহিঙ্গারা হয়ে পড়ে একঘরে। তারপর হতেই দ্বন্দ্ব দেখা দেয় মায়ানমার এবং রোহিঙ্গাদের সাথে। এক সময়ে ব্রিটিশদের দখলে আসে এ ভূখণ্ড। তারা মায়ানমারের ১৩৯টি জাতিগোষ্ঠীর তালিকা প্রস্তুত করে। কিন্তু তার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল না রোহিঙ্গাদের নাম।

★ ২য় ভুল ||

১৯৪৭ সালে তাদেরকে মায়ানমারে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তখন রোহিঙ্গারা পূর্ব পাকিস্তানের (বাংলাদেশ) সাথে থাকার কথা জানায়।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি মায়ানমার স্বাধীনতা অর্জন করে এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু হয়। সে সময়ে পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিল। এ জনগোষ্ঠীর কয়েকজন পদস্থ সরকারি দায়িত্বও পালন করেন। কিন্তু ১৯৬২ সালে জেনারেল নে উইন সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করলে মায়ানমারের যাত্রাপথ ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে শুরু করে।

★ ৩য় ভুল ||

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে যখন পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙ্গালীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল সে সময়ে রোহিঙ্গারা আরেকটি ভুল করে বসে। মায়ানমারের এই রোহিঙ্গারা মুসলমান হিসাবে সমর্থন করলো পাক হানাদার বাহিনীকে। দেশ স্বাধীনের পর বাঙ্গালীর সহানুভূতিও হারিয়ে ফেলে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। বাংলাদেশ জন্মের পর এই রোহিঙ্গারা একূল অকূল দু’ কূলই হারায়।

ইতিহাসের ঘূর্ণিপাকে দু’ কূল হারিয়ে অথৈ সাগরে ভাসতে লাগলো ওরা। মায়ানমার মানুষের কাছে পরিচিত হতে থাকলো এক ‘বেঈমান জাতি’ হিসাবে। রোহিঙ্গাদের দেশ বিভক্ত হবার এই ভুল সিদ্ধান্তই ছিল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ভুল। পূর্বপুরুষ'দের এ দুটি ঐতিহাসিক ভুলের খেসারতে ধুঁকে চলেছে আজোবধি এ প্রজন্ম।

কারণ, এ ভুল'কে কাজে লাগিয়েই বার্মিজ পুঁজিবাদ' মানুষকে উস্কে জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি করে চলেছে।


EmoticonEmoticon