ভাবনার এরোপ্লেন
বাঙালি একাত্তরে নিজেদের একটা ভুখন্ড, স্বাধিকার এবং অর্থনৈতিক মুক্তির আশায় লড়াই শুরু করে। আর তখনই সাংস্কৃতিক মুক্তির প্রশ্নে লড়তে লড়তে সচেতন বাঙালি আবিষ্কার করে এসব অর্জন করতে হলে তাকে ইসলামের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করতে হবে। কারণ ইসলাম মিশে আছে পাকিস্তানের আত্মায়। অধিকাংশ বাঙালিই কাজটা সচেতনভভাবে করেনি, এটা সত্য। তবে যুদ্ধটা করেছিল মরণপন।
পুরো যুদ্ধটাতেই পাকিস্তান দাবি করেছিল, প্রচার করেছিল এবং বিশ্বাস করেছিল ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে। তাই তারা বেছে বেছে হত্যা করছিল হিন্দুদের। ধর্ষণ করেছিল হিন্দু মেয়েদের। লুটপাট এবং ধ্বংসলীলা চালানো হয় হিন্দু পল্লীগুলোতে। ভারতে পালিয়ে যাওয়া বাঙালির প্রায় সবাই ছিল হিন্দু।
পাশাপাশি হত্যা করা হয় ধর্ম নিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের। নাস্তিক এবং মুক্তমনা মানুষদের।
তৈরি করা হয় ইসলামের প্রাথমিক যুগের আদলে রাজাকার, আলবদর, আল শামস এবং এ জাতীয় বহু জেহাদী বাহিনী।
রাজাকার বাহিনীর নেতাদের মুখের দিকে তাকালে এই সত্য আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এদের প্রায় সবাই ছিল টুপি দাড়িওয়ালা। বহু হিন্দুকে নিরাপত্তা দেয়ার নাম করে জোর করে ধর্মান্তরিত করা হয়। বহু পুরুষের লুঙ্গি খুলে খুলে দেখা হয় তাদের খত্না করা আছে কি না। হিন্দুদের মধ্যে কলেমা শেখার হিড়িক পড়ে যায়। কলেমা জিজ্ঞেস করে যাচাই করা হয় তারা হিন্দু না মুসলিম।
বিহারীরা এবং আরো অনেকেই কোমরে কাঠের তলোয়ার ঝুলিয়ে ঝুলিয়ে ঘুরত জেহাদী জোসে। ইসলামের আইডিয়া প্রয়োগ করে হিন্দুদের সম্পত্তি এবং তাদের মেয়েদের গনিমতের মাল হিসেবে বৈধতা দেয়া হয়।
আজকের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট তেমন ভিন্ন কিছু নয়। সাধারণ মানুষ বঞ্চিত। বাড়ছে ধনী গরীবের বৈষম্যের প্রবৃদ্ধি। ক্ষমতা দখল করে আছে শুন্ডা বাহিনীর সদস্যরা। যারা নিজেদের ইসলামের একনিষ্ঠ সেবক বলে দাবি করে।
ভুখন্ড স্বাধীন। কিন্তু মুক্তি মেলেনি, বৈষম্য দূরীভূত না হয়ে আরো বেড়েছে। মোল্লাতন্ত্র দখল করেছে রাষ্ট্রযন্ত্র। ইসলাম বারবার আঘাত করছে মানুষ, ঐতিহ্য, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রের উপর। রাষ্ট্রের হয়েছে রাষ্ট্রধর্ম। পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে বাঙালি সংস্কৃতি। ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। খুন করা হচ্ছে আলোকিত মানুষদের। আবার ছোবল হানছে পাকিস্তানের ব্যানারে লুকিয়ে থাকা আগ্রাসী ইসলাম।
বাঙালি কিছুটা সচেতন এবং বেশিটাই অচেতনভভাবে যুদ্ধ শুরু করেছিল পাকিস্তানের ব্যানারে লুকিয়ে থাকা ইসলামের বিরুদ্ধে। শুভশক্তির সহায়তায় নিজেদের ভুখন্ড শত্রু মুক্ত করতে সক্ষম হয়। কিন্তু মুক্তি মেলেনি।
কী হবে তাহলে? এভাবেই চলবে? না। না।
আমার নানী বলেছেন,
বিপ্লব একটি চলমান প্রক্রিয়া আর স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু আছে শেষ নেই।
সুতরাং "যার যা কিছু আছে ---"
EmoticonEmoticon