বাংলার আরজ আলী মাতুব্বর, আহমদ শরীফ বা হুমায়ূন আজাদকে কি মুসলমান বলা যাবে? শুধুমাত্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণের কারণে তবু যদি মুসলিমরা তাদেরকে মুসলিম বলে স্বীকার করে নেয়ও, তাদের দর্শন, পান্ডিত্যকে কি কিছুতে ইসলামের অবদান বলা যাবে?
আর যাদেরকে এক সময় মুরতাদ, নাস্তিক, কাফের বলে হত্যা করা হয়েছে, একঘরে করা হয়েছে- পরবর্তীকালের তাদেরকেই “মুসলিম দর্শনিক-জ্ঞানী” ব্যক্তি বলে প্রচারণা চালানো চরম ভন্ডামী ও প্রতারণা। আজকে যারা মুসলিম বিজ্ঞানী-দার্শনিক বলে যাদের পরিচয় করে দিচ্ছেন তাদের সবাই-ই ছিলেন সংশয়বাদী। ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছিলেন। পয়গম্ব দাবীকৃতদের “ভন্ড” বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
৯৮০ খৃস্টাব্দে ইবনে সিনার জন্ম বোখারার নিকটবর্তি আফসানা নামক এক গ্রামে। ইবনে সিনার বাবা ছিলেন তুরস্কের বলক প্রদেশের এবং একজন ইসমাইলী মুসলিম। ধর্মতাত্ত্বিক এবং দার্শনিক চিন্তাভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক দিক থেকেই তিনি ছিলেন কোরানের মৌলিক বিশ্বাসের পরিপন্থী। ইবনে সিনার (৯৮০ খৃঃ - ১০৩৭ খৃঃ) সময় আরবীয় দর্শন এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌছায়। তাকে একাধারে দর্শন এবং চিকিৎসা শাস্ত্রের রাজপুত্র নামে অভিহিত করা হত। পশ্চিমের এরিষ্টটল, প্লেটো, নব্য প্লেটোবাদ, এবং স্টয়িক দর্শনের উপর ব্যপক জ্ঞানার্জন করেন তিনি এবং একই সাথে প্রাচ্যের মনিষীদের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং কাঠামো সম্পর্কেও ব্যপক ব্যুৎপত্তি লাভ করেন। কিন্তু এগুলির কোনটিকেই পুরোপুরি ভাবে মেনে চলতেন না বা অণুসরণ করতেন না। তবে সবগুলো বিশ্বাস থেকেই কিছু কিছু উপাদান নিয়ে নিজস্ব একটি বিশ্বাসের ভিত্তি গড়ে তুলেছিলেন। তার সেই ধর্মীয় বিশ্বাসে ইশ্বর (আল্লাহ), মানুষ, এবং এই মহাবিশ্বের সবকিছু পরস্পরের উপর নির্ভরশীল বা মুখাপেক্ষি ছিলো না। তিনি বিশ্বাস করতেন মানুষ এবং সৃষ্টিকর্তা পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত হলেও মানুষ সৃষ্টিকর্তা বা আল্লাহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়। আল্লাহ মানুষের সাথে সরাসরি কোন যোগাযোগ রাখেন না এবং বিশ্বটাকে নিয়ন্ত্রণ করেন না। ইবনে সিনার সাথে এরিষ্টটলের ইশ্বরের পার্থক্য আছে। এরিষ্টটলের ইশ্বর এই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেননি এবং এটা নিয়ে তার কোন মাথা ব্যাথাও নেই। ইবনে সিনার ইশ্বর (আল্লাহ) মধ্যপ্রাচ্যীয় ইশ্বর (Semitic - আরব, হিব্রু, আসীরিয়, ফিনীসিয় ইত্যাদী) কিন্তু তার নিজস্ব দর্শন দ্বারা পুনঃনির্মিত ইশ্বর। তার আল্লাহর গুনাবলীর যৌক্তিক ব্যাখ্যা এবং সৃষ্টিশীলতার সাথে স্পস্টতই কোরানের আল্লাহর গুনাবলীর যৌক্তিক ব্যাখ্যা এবং সৃষ্টিশীলতার পার্থক্য রয়েছে।
ইবনে সিনার বিশ্বাসের সাথে কোরানের বিশ্বাসের সংঘর্ষ যেখানেঃ
১) মানুষ এবং মহাবিশ্বের সৃষ্টিঃ
১) মানুষ এবং মহাবিশ্বের সৃষ্টিঃ
ইবনে সিনার মতে এ বিশ্বের কোনকিছুই শূণ্য থেকে (Ex Nihilo) সৃষ্টি হয়নি। পদার্থের শুরু কিংবা শেষ নাই.... পদার্থ চিরন্তন এবং জগতের সৃষ্টি সময় এবং স্হান দ্বারা সীমাবদ্ধ নয় - এই জগতের কোন শুরু নেই এবং কোন শেষও নেই। কোরানের বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহ সবকিছুই শূণ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন এই মতবাদ তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। বরঞ্চ এ জগৎ তার ইচ্ছাশক্তির ফলস্বরুপ তার সত্বা থেকে বিকিরিত। সক্রিয় বুদ্ধিমত্তা সর্বপ্রথম বিকিরিত হয়, এরপর আত্মা এবং সবশেষে দেহ। সৃষ্টিকর্তা সরাসরি তার সৃষ্টির সাথে কোন যোগাযোগ রাখেন না। আল্লাহ যতদিন ধরে আছে এই জগতের অস্তিত্বও ততদিনকার। আল্লাহ এ বিশ্বকে কোন এক বিশেষ সময়ে সৃষ্টি করেছেন এ মতের বিরোধী ছিলেন। এ বিশ্ব পরম স্রষ্টা থেকে আদি বুদ্ধি এবং অন্যান্য বুদ্ধির মধ্য দিয়ে বিকির্ণ হয়ে অনন্তকাল ধরে বিরাজমান রয়েছে। তিনি আর বলেন সর্বত্র বিরাজিত পরম সত্বা এমন কোন সুশৃঙ্খল এবং মঙ্গলকর বিশ্ব সৃষ্টি করবেন না যেটা তার স্হায়িত্বকে সময়ের প্রেক্ষিতে অতিক্রম করতে সক্ষম নয়।
২) আল্লাহর স্বরুপ এবং তার সর্বজ্ঞানঃ
ইবনে সিনার মতে আল্লাহর স্বরুপ খুবই সাধারণ। তিনি আল্লাহর বিশুদ্ধ একক সত্তায় বিশ্বাস করতেন। তাঁকে অস্তিত্ব সম্পর্কিত দর্শনের কোন শব্দাবলী বা বৈশিষ্ট্য দিয়ে চিহ্নিত করা যাবে যাবে না এবং তাঁকে বিভিন্ন গুণাবলী দিয়ে প্রকাশ করার চেষ্টা হলো তাঁর একত্ববাদেরর স্পষ্ট লংঘন। মুতাজিলাদের মতোই তিনি আল্লাহর একক সত্তায় তাঁর আলাদা আলাদা গুনের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেন। অপরদিকে কোরান অনুযায়ী আল্লাহ বিভিন্ন মানবিক গুনাবলীর অধিকারী এবং তার প্রায় শ'খানেক নাম আছে। ইবনে সিনা যে আল্লাহর কথা বলেন সে আল্লাহ এক পরম, বিশুদ্ধ একক স্রষ্টা, আমাদের পার্থিক জগতের তুলনায় সেই স্রষ্টা বিকারহীন এক সত্ত্বা। সমগ্র বিশ্ব সেই স্রষ্টার জ্ঞান প্রক্রিয়ার ফলাফল। ইবনে সিনার মতে আল্লাহ এ পৃথিবীর সব কিছু সম্পর্কেই একটা সামগ্রিক ধারণা রাখেন কিন্তু পুঙ্খানুপুঙ্খু জ্ঞান রাখেন না। যেহেতু স্রষ্টার জ্ঞান প্রক্রিয়ার ফলাফল এই বিশ্ব, সুতরাং সার্বিক বস্তু যেমন গ্রহ, সূর্য, তারা, গাছ, মাছ, মানুষ এইরকম সার্বিক বস্তু সম্পর্কে স্রষ্টা সচেতন এবং এগুলো তার সার্বিক জ্ঞানের অংশ। কিন্তু স্রষ্টা সার্বিক ‘মানুষ’ সম্বন্ধে জ্ঞান রাখলেও তিনি বিশেষ কোন ব্যক্তিবিশেষ যেমন ‘ইবনে সিনা’, বা হোরাস সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখেন না। ‘মানুষ’ তার জ্ঞান চিন্তার ফসল, এই কারণে মানুষ কি তা তিনি জানেন কিন্তু ইবনে সিনাকে তিনি চেনেন না।
৩) মৃত্যু পরবর্তী দৈহিক পুনুরুত্থানঃ
ইবনে সিনার মতানুসারে মানুষ আত্মা এবং দেহের সমন্বয়ে গঠিত। তবে কোরানে স্পষ্টভাষায় মৃত্যুপরবর্তি দৈহিক পুনুরুত্থানের যে বর্ণনা দেয়া আছে সুনির্দিষ্টভাবে তিনি তা অস্বীকার করেছেন। তার মতে কোরানের বর্ণনা অনুসারে দৈহিক পুনুরুত্থান সম্ভব নয়। এবং তা যৌক্তিকভাবে ব্যাখা করাও সম্ভব নয়। তিনি আত্মার একত্বে বিশ্বাস করতেন। তার মতে, মৃত্যুর পরে পুণ্যাত্মা ফিরে যাবে বুদ্ধির জগতে, এ পর্য্যায়ে আত্মা আপন বিচ্ছিন্ন অস্তিত্ব হারিয়ে শাস্বত বুদ্ধিজগতের সাথে একাত্মতা লাভ করবে।
৪) নবীদের বা নবুয়ত সম্পর্কিত ধারণার সংঘর্ষঃ
নবুয়ত প্রাপ্তি সম্পর্কে ইসলামের ধারণাকে তিনি নামমাত্রে স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু তিনি নিজের মত করে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কোরানের নবি-রাসুলরা প্রত্যেকেই প্রেরিত পুরুষ, অনেকেই আসমানি কিতাব প্রাপ্ত। অনেকের সাথেই জিব্রাইল সরাসরি যোগাযগ করত, এবং স্বশরীরে আল্লাহর সাক্ষাত প্রাপ্ত। ইবনে সিনার মতে নবীরা আল্লাহর মুখপাত্র হিসাবে অর্পিত (Endowed) এবং মনোনীত/আদেশপ্রাপ্ত (Ordained) নন। আসলে তারা মানবীয় গুণাবলির অধিকারী সাধারণ মানুষ যারা কিনা সমাজের চলমান সমস্যা সমাধানের জন্য সমাজেরই সৃষ্টি। সমাজে কিছু মানুষ থাকে যাদের বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নৈতিকতার ক্ষমতা অন্যদের তুলনায় বেশী থাকে। এই নেতা- নবীর উচ্চতর অন্তর্জ্ঞান (Intuition) ক্ষমতার সুবিধা থাকার কারণে গোত্রের কিংবা সমাজের প্রয়োজন এবং সমস্যাগুলো ভাল বুঝতে পারেন। এইসব সমস্যার সমাধানে তার প্রখর কল্পনা শক্তি তাকে সাহায্য করে এবং তার বক্তব্য সাধারণ মানুষদের সফলভাবে বোঝানোর ক্ষমতা থাকে এবং তাদের মাঝে প্রভাব বিস্তার করার ক্ষমতা থাকে। তার বক্তব্যের রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট থাকে। হয়ত তার পক্ষে সক্রিয় বুধিমত্তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হলেও হতে পারে। সেই সক্রিয় বুদ্ধিমত্তা হতে পারে সম্ভাব্য, বাস্তব কিংবা আরোহিত বুদ্ধিমত্তা যাকে খ্রীস্টানদের 'হোলি ঘোস্ট' কিংবা ইহুদী-মুসলমানদের জিব্রাইলের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। তবে নবীদের সেই জ্ঞান তার নিজস্ব উপলব্ধীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। সাধারণ মানুষের বোধগম্যতার কথা মাথায় রেখে নবী তাকে রুপক কিংবা প্রতিকী ভাষায় সাধারণ্যে উপস্হাপন করেন। আর সাধারন মানুষেরা সেটাকেই আক্ষরিক অর্থে ধরে নেয়। কিন্তু জ্ঞানী মানুষেরা কখনও তা করে না।
৫) সূফীবাদঃ
ইবনে সিনার সবচাইতে উল্লেখযোগ্য দর্শনের বই হচ্ছে আল-সিফা (নিরাময় - The Cure)। এটা সম্ভবত একজন মানুষের লেখা দর্শনের উপর সবচাইতে বড় বই। এতে যুক্তি, পদার্থ বিদ্যা, অধি বিদ্যা, ভূ-তত্ব, জলবায়ু বিদ্যা, উদ্ভিদ বিদ্যা, প্রাণী বিদ্যা, গণিত এবং মনবিদ্যা স্হান পেয়েছে। তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য দর্শেনর বই আল ইশারাত ওয়া আল তামজিহাদ (Direction and Notices)। তিনি সুফিবাদের উপর তিনটি অধ্যায় এই বইতে লিখেছেন। সুফিবাদের উপর তার আরও ৩২টির মত প্রবন্ধ/নিবন্ধ আছে। শুধুমাত্র পার্থিব জগতের ভোগ-লালসা থেকে বিরত থাকাটাই তার কাছে যথেষ্ঠ মনে হয়নি। তিনি মনে করতেন জ্ঞানের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছানোর জন্য উদ্ভাসনের (Illumination) চেষ্টা করা উচিৎ। আর উদ্ভাসন সম্ভব জাগতিক এবং মহাজাগতিক জগতের মধ্যে সংযোগ স্হাপনের মাধ্যমে। উদ্ভাসনের এই তত্বটি নিকট প্রাচ্য (পারস্য) এবং নব্য প্লেটোনিক (গ্রীক) মতবাদের বিভিন্ন উপাদানের সংমিশ্রণ। আর এরই মাধ্যমে ইবনে সিনা সূফীবাদের এক নতুন ধারার সৃষ্টি করেন যা হিকমত আল ইশরাক (The illuminative one) নামে পরিচিত। তার ভাবশিষ্য আল সুহারোয়ার্দি পরবর্তিকালে সূফীবাদের এই শাখাটির প্রচার এবং প্রসার ঘটান।
ইবনে সিনার সবচাইতে উল্লেখযোগ্য দর্শনের বই হচ্ছে আল-সিফা (নিরাময় - The Cure)। এটা সম্ভবত একজন মানুষের লেখা দর্শনের উপর সবচাইতে বড় বই। এতে যুক্তি, পদার্থ বিদ্যা, অধি বিদ্যা, ভূ-তত্ব, জলবায়ু বিদ্যা, উদ্ভিদ বিদ্যা, প্রাণী বিদ্যা, গণিত এবং মনবিদ্যা স্হান পেয়েছে। তার আরেকটি উল্লেখযোগ্য দর্শেনর বই আল ইশারাত ওয়া আল তামজিহাদ (Direction and Notices)। তিনি সুফিবাদের উপর তিনটি অধ্যায় এই বইতে লিখেছেন। সুফিবাদের উপর তার আরও ৩২টির মত প্রবন্ধ/নিবন্ধ আছে। শুধুমাত্র পার্থিব জগতের ভোগ-লালসা থেকে বিরত থাকাটাই তার কাছে যথেষ্ঠ মনে হয়নি। তিনি মনে করতেন জ্ঞানের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছানোর জন্য উদ্ভাসনের (Illumination) চেষ্টা করা উচিৎ। আর উদ্ভাসন সম্ভব জাগতিক এবং মহাজাগতিক জগতের মধ্যে সংযোগ স্হাপনের মাধ্যমে। উদ্ভাসনের এই তত্বটি নিকট প্রাচ্য (পারস্য) এবং নব্য প্লেটোনিক (গ্রীক) মতবাদের বিভিন্ন উপাদানের সংমিশ্রণ। আর এরই মাধ্যমে ইবনে সিনা সূফীবাদের এক নতুন ধারার সৃষ্টি করেন যা হিকমত আল ইশরাক (The illuminative one) নামে পরিচিত। তার ভাবশিষ্য আল সুহারোয়ার্দি পরবর্তিকালে সূফীবাদের এই শাখাটির প্রচার এবং প্রসার ঘটান।
৬) একমাত্র আল্লাহই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক: ইসলাম ধর্ম বিশ্বাস অনুযায়ী আল্লাহ হলেন যা কিছু ঘটে তার একমাত্র কার্যকরণ। কোরান শরীফের সুরা আল ইমরানের আয়াত নাম্বার ২৬-২৭ এ কথা পরিস্কার ভাবে বলা আছে।
আল্লাহ ছাড়া আর কারও পক্ষে কোন কিছু ঘটানো সম্ভব না। ইবনে সিনা এই মতের বিরুদ্ধে ছিলেন। তার অধিবিদ্যা সম্পর্কিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী মানুষ এবং অন্য প্রাণী কিংবা এমনকি জড়বস্তুও আল্লাহর সাহায্য ছাড়াই কোন কিছুর সংঘটনের কারণ হতে পারে।
এছাড়াও কোরানে পরিষ্কার ভাবেই বলা আছে মানুষের জীবনে যা কিছু ঘটে তার নিয়ন্ত্রক আল্লাহ। ইবনে সিনা একজন যুক্তিবাদী হিসাবে এই তত্ব প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন মানুষ নিজেই নিজের কর্মের নিয়ন্ত্রক।
৭) মদ্যপান: দুটি জিনিষের উপর ইবনে সিনার আকর্ষণ/মোহ ছিলো সর্বজন বিদিত - তার ক্রীতদাসী এবং মদ। যদিও প্রথমটি ইসলাম ধর্মমতে যায়েজ এবং সেই সময়ের প্রেক্ষিতে পশ্চিম এবং প্রাচ্যে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই তা প্রাক্টিস করত বিধায় সেটা এখানে গুরত্বপূর্ণ না তবে মদ্যপান ইসলাম ধর্মমতে কঠোরভাবে নিষেধ। মদের প্রতি তার আকর্ষণের যে ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন সেটা খুবই চিত্তাকর্ষক। তিনি বলেছেন ধর্মীয় নিয়ম অনুসারে মদ বোকা/নির্বোধদের (fool) জন্য নিষিদ্ধ। কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক আইন অনুসারে বুদ্ধিমানদের জন্য মদ হালাল।
একজন যুক্তিবাদী মানুষ হিসাবে মক্কা-মদীনা বনাম এথেন্স-আলেকজান্দ্রিয়ার মধ্যে তিনি এথেন্স-আলেকজান্দ্রিয়াকে বেছে নিয়েছিলেন। তার পূর্বসূরী আল কিন্দী এবং উত্তরসূরী ইবন রুশদের মত তাকেও কাফের ঘোষণা করা হয়েছিলো। মোল্লাদের প্ররোচণায় আব্বাসীয় খলিফা আল মুস্তানজিদ (মৃত্যু ১১৭০ খৃঃ) তার সব বই পুড়িয়ে ফেলার আদেশ দিয়েছিলেন। ইসমাইলী ধর্মতাত্মিক এবং রাজনৈতিক মতাদর্শ ধারণ করা এবং প্রচার করায় তিনি বারবার বিপদাপন্ন হন, পাড়ি জমান এক দেশ থেকে আরেক দেশে।
তথ্যসংগৃহীত-
ব্লগ। ,ইনলাইন পত্রিকা,ফেইসবুক কমেন্ট এবংইবনে সিনা জিবনী থেকে।
ব্লগ। ,ইনলাইন পত্রিকা,ফেইসবুক কমেন্ট এবংইবনে সিনা জিবনী থেকে।
EmoticonEmoticon