শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৭

প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির দুর্নীতির ফর্দঃ মোটেও সেক্সি কিছু নয় !

নির্গুণ ও নির্দোষ মানুষ প্রায় অসম্ভব কল্পনা। এমনকি এক ধর্মের পয়গম্বরেরও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকে সেই ধর্মের বাইরের লোকদের। আর, রাষ্ট্র যখন কোনো ব্যক্তিকে অপরাধী হিসেবে দেখাতে চায়, তা 'চাহিবা মাত্র' সম্ভব হয়।

রাষ্ট্র-ক্ষমতার ধারকেরা যখন এক সময় সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে 'ফেইভার' করেছেন, তখন তিনি প্রধান বিচারপতি হয়েছেন। আবার, তারা যখন 'ডিসভেইভার' করেছেন, তখন রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ চার/পাঁচ বিচারপতিকে ডেকে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ১১ দুর্নীতির ফর্দ হস্তান্তর করেছেন।

জনগণ স্বভাবতঃই প্রশ্ন করছে, সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে যখন প্রধান বিচারপতি করা  হয়, তখন এই অপরাধের কাহিনী আবিষ্কার করা হয়নি কেনো? এই প্রশ্নের উত্তর এখন পাওয়া যাবে না; পাওয়া যাবে রাষ্ট্র-ক্ষমতা হাত বদল হলে।

অপরাধের কাহিনী কার না বিরুদ্ধে আবিষ্কার করা যাবে? রাষ্ট্রের সার্বভৌম ক্ষমতা যার বা যাদের হাতে থাকে, রাষ্ট্রের সমূদয় বাহিনী তার বা তাদের উচ্চারিত ও অনুচারিত নির্দেশে যে-কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অপরাধের কাহিনী আবিষ্কার করতে পারবে।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কি একসময় অর্থ দুর্নীতির বিশাল বিশাল কাহিনী সাক্ষী-সাবুদ-সহ আবিষ্কৃত হয়নি? হয়েছে এবং ভবিষ্যতে যে আবার আবিষ্কৃত হবে না, এমন কথা সম্ভবতঃ ঈশ্বরও বলতে পারবেন না।

আজ যে পাঁচ বিচারপতি 'নৈতিক স্খলন' নির্দেশ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সাথে একই বেঞ্চে বসতে নারাজ, রাষ্ট্র চাইলে তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একই প্রকারের দুর্নীতির তালিকা প্রস্তুত করতে পারবে। এমনকি, রাষ্ট্র চাইলে রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধেও এমন তালিকা প্রস্তুত করতে পারবে।

সুতরাং প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত দুর্নীতির তালিকা প্রকাশ তেমন কোনো সেক্সি ঘটনা নয়। এগুলো জানা গল্প; নয় কি?

১৪/১০/২০১৭
লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড


EmoticonEmoticon