বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭

ওমর খৈয়ামের একটি অমর কবিতা

যদি মাতালের শিক্ষাকেন্দ্র মাদ্রাসাগুলো এপিকিউরাস, প্লেটো, এরিস্টোটলের দর্শন - শিক্ষালয় হতো,
যদি পীর - দরবেশের আস্তানা ও মাজারগুলো গবেষণা প্রতিষ্ঠান হতো,
যদি মানুষ ধার্মিকের ধর্মান্ধতার পরিবর্তে নীতিজ্ঞানের চর্চা করতো,
যদি মানুষ শাস্ত্র- কিতাব থেকে কেবলমাত্র যুক্তিসঙ্গত ভালো জিনিস গ্রহণে আগ্রহী হতো,
যদি শাস্ত্রের উদ্ভট নিয়মকানুনকে তারা ঘৃণার সঙ্গে বর্জন করতো,
যদি শাস্ত্রকে মানব কল্যাণের জন্য মনে করে মানুষকে শাস্ত্রের উর্ধ্বে স্থান দিতো বিচক্ষণের মতো,
যদি তারা আল্লাহ আল্লাহ ও শয়তান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তির কল্পনা করে কাহিনী সৃষ্টি না করতো,
যদি উপাসনালয়গুলো সর্ববিদ্যা চর্চার কেন্দ্র হিসেবে গড়ে ওঠতো,
যদি শাস্ত্রবাহক আলেম বুজর্গরা দার্শনিক ও চিন্তাবিদ হতো,
যদি তারা কাল্পনিক গালগল্পকে শাস্ত্রীয় সত্য বলে প্রচার না করতো,
ধর্ম প্রচারকেরা যদি ধর্মতত্ত্বের পরিবর্তে জ্ঞান বিজ্ঞান দর্শন প্রচার করে বেড়াতো,
জ্যোতির্বিদ্যাকে যদি কেউ ভাগ্য গণনার কাজে না লাগাতো,
ধর্মতত্ত্বের চর্চার পরিবর্তে যদি গণিত বীজগণিেতের উন্নতি সাধন করতো,
মুসাফির ও হাজীরা যদি জ্যামিতি, ভূগোলের খবর রাখতো,
যুক্তিবিদ্যা যদি সুফীতত্ত্ব, সংস্কার, কুসংস্কারের জায়গা দখল করতো,
ধর্ম যা মানবজাতিকে বিভক্ত করে তা মানবতার দ্বারা প্রতিস্থাপিত হতো,
এরিস্টোটল, প্লেটো, বু আলী সিনা যদি নবী পয়গম্বর হতো,
মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও রাজপ্রাসাদগুলো যদি সৃষ্টি না হতো,
পৃথিবী তাহলে বেহেস্তে পরিণত হতো,
পরপারের বেহেস্ত বিদায় নিতো,
প্রেম প্রীতি মুক্তি আনন্দে জগৎ পরিপূর্ণ হতো নিঃসন্দেহে।


EmoticonEmoticon