২০০৩ সালে পরিচালক অলিভার স্টোনকে এ কথা বলেন ফিদেল। তিনি বিপ্লবের সুবিধাভোগী নন,বিপ্লবের প্রতিশব্দ।
আদর্শ মানুষকে একত্রিত করে,আদর্শ আমাদের সংগ্রামী জনতায় পরিণত করে,আদর্শ শুধু ব্যক্তিকেই নয়, সমষ্টিকেও বিপ্লবী করে তোলে।
-ফিদেল ক্যাস্ট্রো
সাম্রাজ্যবাদী হিংসার বিরুদ্ধে একটা নীল আকাশের নাম। সেই নীল আকাশ কালো মেঘে ছেয়েছে। আমেরিকার সিআইএ কাস্ত্রোকে খুন করার চেষ্টা করেছে বহু বার। পারেনি। আর পারবেও না। চলে গিয়েও কাস্ত্রো আরও এক বার আমেরিকাকে হারিয়ে দিলেন।
তার নামে কোনো রাস্তা নেই কিউবায়, নেই কোনো মূর্তিও; এসবের প্রয়োজনও অবশ্য নেই ফিদেল কাস্ত্রোর; দেশের সীমানা ছাড়িয়ে কোটি মানুষের মনে তার নাম।
দেশে বিরোধীদের চোখে তিনি ‘স্বৈরাচার’, কট্টর পুঁজিবাদী দেশগুলোর কাছে তার পরিচয় ‘একনায়ক’; বিপরীতে বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে তিনি ‘আস্থার প্রতীক’, কাছে তিনি ‘এল কমান্দান্তে (দি কমান্ডার)’, মুক্তি সংগ্রামী সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ‘কিংবদন্তি’।
ক্যারিবীয় সাগরের যুক্তরাষ্ট্রের ধনীদের অবকাশ যাপনের একটি বিনোদন কেন্দ্র কিউবাকে পুরোপুরি বদলে দিয়ে, ওয়াশিংটনের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সেখানে লাল পতাকা উড্ডীন রেখে ৫ দশকজুড়ে বিশ্ববাসীর আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো।
“১৯৫৯ সালে যখন ক্ষমতা দখল করেন, তখন খুব কম লোকই ভাবছিল ফিদেল কাস্ত্রো কিছু করতে পারবেন,” বলছেন কিউবা বিষয়ক আমেরিকান বোদ্ধা ড্যান এরিকসন।
কিন্তু থেমে থাকেননি ফিদেল; বিপক্ষ মত,
ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে চলতে চলতে ৯০ বছর বয়সে বিদায় সব কিছু বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় কোলের মধ্যে একটি কমিউনিস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে তা টিকিয়ে রাখার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয়ও হয়ে থাকবেন ফিদেল কাস্ত্রো।
ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে চলতে চলতে ৯০ বছর বয়সে বিদায় সব কিছু বাদ দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় কোলের মধ্যে একটি কমিউনিস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে তা টিকিয়ে রাখার জন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের গবেষণার বিষয়ও হয়ে থাকবেন ফিদেল কাস্ত্রো।
ফিদেলের জন্ম এক অতীব সাধারণ পরিবারে। পেশায় চাষি মায়ের ছেলে যে বন্দুক হাতে বিদ্রোহ ঘোষণা করবে, তা কেই বা জানত। দরিদ্র পরিবারের একরত্তি ছেলে যে একদিন ‘দ্য গ্রেটদের’ আসনে সবার প্রথম দিকে বসবেন তা একমাত্র ইতিহাসই জানত না। ইতিহাস তো নিজে হাতেই লিখেছেন কাস্ত্রো। কখনও বন্দুকের নলে, কখনও কলমের খোঁচায়, কখনও আবার একটানা সাত ঘণ্টার ভাষণে।
ফিদেল আজ সশরীরে নেই, তবে রয়ে গিয়েছে তাঁর রক্তবীজেরা, রয়ে গিয়েছে তাঁর আদর্শ। তাই ফিদেল নামের আগে একটা শব্দ “অমর” অনায়াসেই লিখে দেওয়া যায়, বলা যায় “অমরত্ব” যোগ্য সম্মান পাবে ফিদেলের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে। কারণ, ৬৩৪ বার যাঁর বিরুদ্ধে খুনের চক্রান্ত করেও তাঁর কিঞ্চিত কেশও ছিড়তে পারেনি শক্তিধর মার্কিন দেশের দশ শক্তিশালী রাষ্ট্রপতি, তাঁকে আর অমরত্বের পরীক্ষায় বসতে হয় না। তাই একথা বলতেই হয়, ফিদেল আর তাঁর জীবনের পার্টনারশিপ “সিক্স থ্রি ফোর, উইদআউট নো লস” (৬৩৪ বার জয় ফিদেলের, শূন্য শূন্যই থেকে গিয়েছে)।
বিপ্লবীর মৃত্যু নেই,এই দিন শুধু তোমার দেহত্যাগ হয়েছে।তুমি রবে বিপ্লব যতদিন পৃথিবীতে থাকবে।
EmoticonEmoticon