ধর্ষণের পর দেখছি তার পক্ষে পোস্ট ৷ এইটুকুন বাচ্চা ছেলে! সে বলছে ধর্ষণ আছে বলেই মেয়েরা এখনো পর্দা করে চলে, ঘর থেকে রাতে বের হয়না আরো কত কথা! ছেলেটা যদি আমার হত এক হাতে টেনে ধরে আর এক পায়ে গলায় পারা দিয়ে অর্ধমৃত করতাম ৷ যদিও আমার ছেলে এমনটা বলার সাহসতো দূর, চিন্তাও করতে পারত না ৷ কত বড় জানোয়ারের বাচ্চা হলে এসব বলা যায়! আর এগুলো বড় হলে কেমন হবে ভাবতে ও ঘিন লাগে ? আর কেউ দেখলাম সেদিন সূবর্ণ চরের ধর্ষণ নিয়ে নারীবাদীদের বলছে বেশ্যা ৷ নারীবাদীরা যেনো ধর্ষণ করেছে ৷ পুরুষ নারীর উপর ক্ষোভ উড়াতে গেলেই প্রথমে পুরুষের লিঙ্গটা মাথায় উঠে যায়, এরা নারীর বেলায় লিঙ্গ ছাড়া কিছু ভাবতেই পারেনা ৷ এটা তারা প্রথমে এই পুরুষতান্ত্রীক সমাজে দেখে, দেখে শিখে তারপর স্বভাবে পরিণত হতে হতে এক সময় হিংস্র জানোয়ার হয়ে উঠে ৷
আমি আগের মত লিখিনা ৷ লিখিনা কারণ প্রায়ই নিজের কাজে আর মেয়েদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ি ৷ কিন্তু সব দেখি ৷ মাঝে মাঝে মেজাজ খুব গরম হয়ে যায়, উত্তেজিত হলে অনের সময় মাইগ্রেনের প্রবলেম দেখা দেয়, চেষ্টা করি নিজেকে সামলে নিতে, কিন্তু কত ?
এই দেশটাতে ধর্ষণ একটা জাতীয় খেলায় পরিণত হয়েছে ৷ নারীকে হারাতে হলেই ধর্ষণ করতে হবে ! নারীর উপর প্রতিশোধ নিতে ধর্ষণ করতে হবে ! নারীকে দমাতে হলে ধর্ষণ একটা মূল উপায় হিসেবে বিবেচ্য ৷ এই যে ছেলেটা বললো “ধর্ষণ আছে বলেই নারীরা ঠিক আছে, রাতে বের হয়না, পর্দা করে” এসব সে কিভাবে বলে ? সে গর্ভ হতে শিখে আসেনি জানি , এসবের জন্য দায়ী কে হবে ? এই মানসিকতা তাকে তৈরী করে দিয়েছে ধর্ম সমাজ তথা চারদিকের নোংরা পুরুষ তান্ত্রীক শিক্ষা ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ৷ নারীরা ঘর হতে বের না হলেই যেনো পুরুষ বেঁচে যায়, নারীরা মুখ খুললেই যেনো বেঁচে যায় ৷ নারীদের কিছুই এদের সহ্য হচ্ছে না শুধু শরীর ছাড়া ৷ এ দেশের জ্ঞানী-মূর্খ, সুশীল-কুশীল, ভদ্র-অভদ্র, ক্ষমতাবান, চাটুকার, ধার্মিক, অধার্মিক সবাই আড়ালে গিয়ে নারীর পোষাক খুলে দেখতে ব্যস্ত; খুলে নিতে ব্যস্ত ৷ আর বাইরে বলছে কেউ বস্তায় ভরতে, কেউ তুই বেশ্যা তুই বেশ্যা বলতে ৷ সুযোগ পেলেই কেউ ছাড়ছেনা, এমনিতে সবাই সাধু স্বজন ৷ প্রতিটা নারীই জানে তাদের ছোট হতে বড় হওয়া পর্যন্ত কতটা ঝড়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয় ৷ এই একটু ভালো করে কথা বললেই সুযোগ নিতে চায়, না বললে জোর করতে চায় ৷ এই যাকে অনেকের মধ্যে ভালো জানি, সম্মান করি শ্রদ্ধা করি সে এক সেকেন্ড সময় নেয়না আতংক হতে ৷ এসব দেখতে দেখতে বিশ্বাস নামক জিনিসটাই উঠে যায় আমাদের নারীদের পুরুষের উপর থেকে ৷
ধর্ষণের বিচারে এত অনিহা সরকার তথা প্রশাসনের এটা আশা করা যায় না ৷ এই ধর্ষণ নিয়ে নারীরা কতটা আতংকে থাকেন সেটা নারীরাই জানে ৷ অসহায় অবলা বাধ্য নারীদের সেই আতংকের প্রবণতা বেশি ৷ ঐ লোক যাদের বেশ্যা বললো তারা ধর্ষিত সহজে হয় না, কারণ তারা মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখেছে ৷ পুরুষ যে ভয় ছোট হতে মনে ঢুকিয়ে দিয়েছে সেটা লাথি মেরে বের করে দিয়েছে মন থেকে ৷ তাই তারা নারীবাদী দেখলেই ভয় পায়, নারীবাদী এখন এই তাদের আতংক তাই কি করবে ? ঐ মুখ দিয়ে বেশ্যা বেশ্যা করা ছাড়া কাছেতো আসতে পারছে না, ধর্ষণ করতে পারছে না, গলা বড় করে ভয় দেখিয়ে কুঁজা করে রাখতে পারছে না ৷ উপায় মুখ আছে ছাগলের মত, মুখ মারছে ৷
EmoticonEmoticon