SEX বা যৌনতা বিজ্ঞানসম্মত ভাবেই একটা অতি সহজ এবং স্বাভাবিক ব্যাপার । মানুষের যৌনতার মধ্যে বা যৌন প্রবৃত্তির মধ্যে অথবা সেটাকে প্রকাশ করার মধ্যে ভুল বা অসুন্দর কিছুই নেই। ছেলে ও মেয়ে পরস্পরকে আকর্ষন করবে বা ভালবাসবে, প্রেম করবে এটা গর্হিত কাজ নয়। আর ভালবাসার ক্ষেত্রে যৌনতা অবশম্ভাবি শর্ত। কামহীন প্রেমের কথা ভণ্ডামির নামান্তর । কিন্তু এই প্রেম ভালোবাসা এবং যৌনতার দ্বারা যদি স্বাভাবিক মনুষ্যত্ব এবং বিবেকবুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়ে যায় সেটা বিপজ্জনক এবং ক্ষেত্রবিশেষে কদর্য ও কুৎসিত ।
----------------------------------------
জন্তু জানোয়ারকে সেক্সের প্রবৃত্তি জাগানোর জন্যে বা নিজেদের উত্তেজিত করার জন্যে পর্নসাইট, ব্লুফ্লিম, অশ্লীল সাহিত্য বা উত্তেজক পোশাকের দরকার হয় না। যৌনক্রিয়া ও সেক্সুয়াল প্রভাব মানুষ ও জন্তুর ক্ষেত্রে সম্পুর্ন আলাদা । মানুষ লক্ষ্যবস্তু সামনে না থাকলেও যৌনচিন্তা করে নিজেকে উত্তেজিত করতে পারে এবং নিজের যৌন উত্তেজনা প্রশমিত করার ক্ষমতা রাখে, যদিও তা বিকৃত উপায়ে । জানোয়ার কিন্তু ভেবে তার যৌন ইচ্ছা চরিতার্থ করতে পারে না, কারন জন্তু চিন্তা করতে পারে না। একটা বিশেষ সময়ে, বিশেষ পরিস্থিতিতে বা বিশেষ ঋতুতে লক্ষ্যবস্তু সামনে এলে জন্তুর উত্তেজনা বাড়ে এবং সে যৌনক্রীড়ায় লিপ্ত হয় । মানুষের ক্ষেত্রে এটা সবসময়ে নাও হতে পারে । মানুষের শরীরগত আনন্দটা মন নির্ভর। লক্ষ্যবস্তু সামনে থাকলেও যদি মন সাড়া না দেয় তাহলে মানুষের ক্ষেত্রে অনেক সময়ে যৌনতার প্রতি বিতৃষ্ণা আর ঘৃণাও জন্মাতে পারে । অন্য জন্তুর ভাবগত উৎপাদনের বা মনোজগতের উৎপাদনের জায়গা নেই । কিন্তু মানুষের আছে । মানুষ অন্য জানোয়ারদের মতো সম্পুর্ন প্রাকৃতিক নিয়মের বশীভূত নয়, তাই একদম আদিমযুগের কথা বাদ দিলে মানুষ ও জীবজন্তুর যৌনক্রিয়াও একরকম নয় । কেউ বলতে পারেন যে জন্তু এবং মানুষের যৌনতার বা সহবাসের মৌলিক রূপে কোন পার্থক্য নেই কিন্তু সেটাও সঠিক কথা নয় । মানুষ নিজের যৌনতার কলা কৌশলের উন্নতি ঘটাতে পেরেছে, তাতে কল্পনা মিশিয়েছে। মনুষ্যেতর জীব তা পারেনি । মানুষের সেক্সুয়াল প্রবৃত্তির সাথে রুচির প্রশ্নটা থাকা খুবই জরুরী। তেষ্টায় ছাতি ফাটলেও মানুষ ঢকঢক করে নর্দমার জল পান করে না। পরিষ্কার জল খোঁজে। কারন নর্দমার জলপানের ক্ষেত্রে তার রুচির প্রশ্ন জড়িয়ে থাকে। ঠিক তেমনই নিজের সিদ্ধান্ত ও আদর্শের সাথে আপোষ করে, রুচি বিসর্জন দিয়ে যৌনতায় লিপ্ত হলে সেটা স্বাভাবিক যৌনতা নয় যৌনদাসত্বে পর্যবাসিত হয় ।
----------------------------------------
মনুষ্য সমাজে পারস্পরিক ভালবাসা আবহমান কাল ধরেই আছে। ভালবাসা না থাকলে সমাজ চলবে না। কিন্তু শিশুর প্রতি ভালবাসা বা বৃদ্ধ-বয়স্ক লোকের প্রতি ভালবাসা নিয়ে সমাজের বিশেষ কৌতুহল বা মাথাব্যথা থাকে না। কিন্তু যুবক-যুবতীর ভালবাসাকে সমাজ একটা অন্যচোখে দেখে। কারন সেই ভালোবাসায় পরস্পর পরস্পরের প্রতি একটা যৌন আকর্ষন থাকে। শৈশব থেকে কৈশোর তারপরে যৌবন শেষে বার্ধক্য এই শারীরিক গঠনগত পর্যায়ে কৈশোরের শেষ থেকে সমস্ত যৌবন এবং প্রৌঢ়ত্বের শুরু পর্যন্ত বিভিন্ন শরীরবৃত্তিয় পরিবর্তন এবং হরমোন ঘটিত কারনে একটা তীব্র যৌন তাড়না থাকে। সেটা সেক্সকে কেন্দ্র করেই থাকে। এটা বিজ্ঞানসম্মত এবং অতি স্বাভাবিক একটা ব্যাপার । কিন্তু মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতা আছে বলে এই যৌন তাড়নাটা বাঁধা থাকে একটা সামাজিক নীতির অনুশাসনে। একটা রুচি সংস্কৃতির আধারে। কিন্তু সমাজে বিভিন্ন ব্যক্তির রুচিগত এবং সংস্কৃতিগত মান'টা বিভিন্নতা থাকায় কারোর মধ্যে সেক্স আসে সরাসরি , কারোর মধ্যে কাব্য-সাহিত্য আলোচনা , তর্কাতর্কি, সিনেমা দেখা, একসাথে ঘোরা , রেস্তোরাঁয় খাওয়া, চিঠি এর মধ্যে দিয়ে এগুলো জন্মায়। একটা যৌন আকর্ষণের রূপ হিসাবে এই ভালোলাগা বা ভালোবাসাটা যুবক যুবতীদের মধ্যে আসে এবং সাধারনতঃ যৌবনের শুরু থেকে প্রৌঢ়ত্বের শেষ পর্য্ন্ত এর সাধারণ স্থায়িত্ব। অবশ্য বিকৃত রুচি বা perverted মানুষদের কথা আলাদা। যৌনতা একটা বাস্তব সত্য। শরীর ধর্মের দিক থেকে, মানসিক সুস্থতার দিক থেকে সাধারণ মানুষের যৌন জীবনের ভীষণ প্রয়োজন আছে। কিন্তু সভ্যতার সৃষ্টিকর্তা মানুষ মনুষ্যেতর জীবের মতো যৌন আচরন কখনোই করতে পারে না। জানোয়ার যাকে সামনে পায় কোন বাছবিচার না করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। কিন্তু মানুষ তা পারেনা। যারা এইরকম করে তাদেরকে মানুষ বলতে আমার ঘেন্না হয়। কারন যৌনতা আছে কিন্তু ভালবাসা নেই এটা বিকৃত এবং কদর্য জিনিস। যৌনতাহীন প্রেম যেমন অবাস্তব জিনিস ঠিক তেমনই প্রেমহীন যৌনতাও কুৎসিত জিনিস ।
----------------------------------------
যৌনতা সম্বন্ধে একজনের দৃষ্টিভঙ্গি ঠিক না ভুল সেটার মাপকাঠি কি? এইক্ষেত্রে আমার নিজের খুব সহজ উত্তর হচ্ছে কোন ছেলে অথবা মেয়ের জীবনে প্রেম বা যৌনতা আসবার পরে সে পুরুষ হিসাবে বা নারী হিসাবে আরও নিম্নগামী হল নাকি মানুষ হিসাবে আরও মহৎ হল সেটার ওপরে বিচার্য হতে পারে। সত্যিকারের বিবেকবান আদর্শবান কিংবা সিদ্ধান্তবাদী পুরুষ বা নারী ভালবাসা, প্রেম যৌনতার ক্ষেত্রে নিজের সিদ্ধান্তের সাথে আপোষ করে না। প্রেমে অন্ধ হয়ে বা ভালবাসতে গিয়ে সে কারোর কাছে বাঁধা পড়েনা । তার ভালোবাসার পাত্র বা পাত্রী তাকে প্রেম বা সেক্সের দোহাই দিয়ে যে কোন রকম কাজে বাধ্য করতে পারে না । বরং প্রেমের দিব্যি দিয়ে বা যৌনতার আকর্ষনে তার সঙ্গী বা সঙ্গিনী তাকে তার সিদ্ধান্ত বা আদর্শের বিরুদ্ধে গিয়ে কোন কাজ করতে বললে বা হীন কাজ করতে বললে সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি তার ভালোবাসা এবং যৌন ইচ্ছা প্রশমিত হয় বা শুখিয়ে যায় । ভালোবাসা যদি এইভাবে আসে , সেক্সের আকর্ষন যদি এইভাবে হয় তবে তা সঠিক বলে আমি মনে করি । আমার ভালোবাসার মানুষটার সান্নিধ্যে এসে বা তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে আমি দুর্বল হবো না। আরও উন্নত হবো এবং তাকেও একজন মানুষ হিসাবে সমাজে আরও উন্নত করবো । তবেই সেটা সত্যিকারের ভালোবাসা, সঠিক সেক্সুয়াল রিলেশান। যদি পারস্পরিক ভালোবাসা আর যৌন সম্পর্ক কোন নারী বা পুরুষকে সমাজ বিমুখ করে দেয়। সমাজভাবনা থেকে দূরে সরিয়ে স্বার্থপর করে তোলে, চরিত্রকে দৃঢ় করার বদলে কমজোর করে দেয় তাহলে সেটা যৌনদাসত্ব এবং ক্লীবতা ছাড়া আর কিছুই নয় ।
----------------------------------------
যারা ভালবাসা খুঁজে বেড়ায়, ভালবাসা পাওয়ার জন্যে কাঁদে তাদের একটা কথা মাথায় রাখা উচিত যে ভালো টাকার চাকরী করে, প্রচুর টাকা বা সম্পত্তির মালিক অথবা দেখতে অপূর্ব সুন্দর বা সুন্দরী, স্মার্ট হলেই সেই ছেলে বা মেয়ের কাছ থেকে সত্যিকারের ভালোবাসা পাওয়া যায় না । যার সমাজের সমস্ত স্তরের মানুষের প্রতি একটা মমত্ববোধ আছে, একটা দরদবোধ আছে, সামাজিক অবিচার, সমস্যা যাদের ভাবায়-কাঁদায়, কিছু করার জন্যে বিচলিত করে সেই সিংহ হৃদয় ছেলে মেয়েরাই কাউকে সত্যিকারের ভালোবাসা দিতে পারে। পারিপার্শ্বিকতাকে অস্বীকার করে আত্মসর্বস্ব প্রেম বা ভালোবাসা একটা বুনিয়াদহীন ঘরের মতো। এটার স্থায়িত্ব নেই। সমাজভাবনা বহির্ভূত ছেলেমেয়েরা কখনোই ভালোবাসার সৌন্দর্য্য এবং উচ্চতর মানকে আয়ত্ব করতে পারে না।
----------------------------------------
প্রেম বা ভালোবাসা সম্পর্কে আরেকটা জিনিস বোঝা দরকার, প্রেম বা ভালোবাসা একটা অনুভূতি এবং এর সাথে সেক্স অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত। এই প্রেম বা ভালবাসা সংক্রান্ত অনুভূতিটা কিন্তু পুরুষ ও নারী উভয় পক্ষেরই থাকা দরকার। এটা একতরফা সম্ভবই নয়। একতরফা ভালবাসা পূর্নতা পায়না। তাই এই সম্পর্কে একটা কথা পরিষ্কার বুঝতে হবে, সেটা হচ্ছে আমাকে যে চায় না আমি তাকে জোর করে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কামনা করতে পারি না। আমি একসময়ে একজনকে চেয়েছিলাম কিন্তু যে মুহূর্তে আমি জানতে পারলাম বা বুঝতে পারলাম আমি তাকে যতই চাই বা তাকে নিয়ে আমার যতই আবেগ থাক সে কিন্তু আমাকে চাই না বা আমার প্রতি তার প্রেম ভালোবাসা সম্পর্কিত কোন দুর্বলতা নেই, তৎক্ষণাৎ আমি আর তাকে চাইবো না। হয় আমি তার প্রতি প্রেমের আবেগটাকে বন্ধুত্বে পরিণত করবো আর সেটা সম্ভব নয় মনে করলে পত্রপাঠ তার থেকে দূরে সরে আসবো এবং এই সরে আসার জন্যে আমার মধ্যে বিন্দুমাত্র কোন হতাশা কাজ করবে না। যা আমি পাবো না , যা আমার পাওয়ার কথা নয় তা নিয়ে আমি জোর জবরদস্তি করবো কেন? তাহলে আমার সাথে একটা নীচ বা ইতরের কি পার্থক্য থাকবে? যাকে আমার ভালো লেগেছিল, যার সাথে আমি শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে চেয়েছিলাম সেটা তো ভালবাসার ওপরে ভিত্তি করেই চেয়েছিলাম, একটা পারস্পরিক সম্মানবোধের ওপরেই চেয়েছিলাম। তাই সে আগ্রহী না হলে আমি আমার আচরনের দ্বারা এমন কিছু করতে পারি না যার জন্যে মেয়ে বা ছেলে হিসাবে তাকে সমাজের কাছে ছোট হতে হয়। এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় যাতে সামাজিক ক্ষেত্র অথবা সোস্যাল মিডিয়া কারোর কাছে সে মুখ দেখাতে পারে না । আমি এই কাজ করতে পারি না ।
আরও একটা জিনিস ভালবাসায় কাজ করে, সেটা হচ্ছে পারস্পরিক ভালোলাগা ও যৌনসম্পর্ককে কেন্দ্র করে নারী ও পুরুষ বা প্রেমিক প্রেমিকা বা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে যে আবেগ কাজ করে তাতে তারা দুজনেই একজন আরেকজনকে নিজের সম্পত্তি হিসাবে মনে করেন। অথচ দুজনেই স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব। দু'জনের স্বাধীন সত্ত্বা একে অপরকে ভালবাসার ক্ষেত্রে কোন বাধা হওয়ার কথা নয় । অথচ দুজনের মধুর সম্পর্কের ভেতরে যে ভাবনা কাজ করে তা হল ও আমার property. দু'জনে দু'জনের প্রতি কর্তব্যপরায়ন ও দায়বদ্ধ কিন্তু তার সঙ্গে একজন আরেকজনের সম্পত্তি এই মনোভাব থাকার জন্যে একজনের চারিত্রিক বিকাশের জন্যে, সামাজিক মঙ্গলের জন্যে সমাজভাবনা থেকে কেউ কাউকে এগিয়ে দিতে পারে না।
----------------------------------------
পারস্পরিক আকর্ষণবোধ ও ভালবাসাটা একটা উন্নত মূল্যবোধের আধারে না হওয়ায় সেখানে একটা অবিশ্বাস জন্ম নেয় । সেখান থেকেই নিজের স্ত্রীকে বা প্রেমিকাকে পুরানো বন্ধুর সাথে বা অন্যের সাথে হেসে কথা বলতে দেখলে বা মেলামেশা করতে দেখলে বা হঠাৎ করে কোথাও একসাথে দেখলে সন্দেহ জাগে, নানা প্রশ্ন জাগে । ঠিক তেমনই কোন মেয়ে যদি তার স্বামীকে বা বয়ফ্রেন্ডকে নিজের বান্ধবী বা আরেকটি মেয়ের সাথে খুব সহজ ভাবে মিশতে দেখে তাহলেই তার সন্দেহ জাগে, মন খারাপ হয়ে যায় । অথচ এক্ষেত্রে সেই স্বামী স্ত্রী বা প্রেমিক প্রেমিকা দুজনেই জানে পরস্পরের প্রতি একটা গভীর ভালবাসা ও আবেগ থেকেই তারা বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়েছিল বা একজন আরেকজনের কাছাকাছি এসেছিল । অথচ সত্যিই যদি তাদের একজন আরেকজনকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে একটা মূল্যবোধ থাকে, সম্মানবোধ থাকে বা জোরালো ভিত্তি থাকে তাহলে তার স্বামী বা স্ত্রী কার সাথে মিশছে, কথা বলছে সেটা নিয়ে তার মন খারাপ হবে কেন? রাতের ঘুম উড়বে কেন?
----------------------------------------
ইতিহাস ও বিজ্ঞান সম্বন্ধে অজ্ঞ একদল মানুষ বলেন সেক্স কে ঘৃণ্য মনে করলেই তাকে পরিত্যাগ করা যায়। কিন্তু তারা আবার প্রেম ভালোবাসার কথা বলেন । ভালোবাসার মধ্যে দৈহিক চাহিদা নেই এটা একদম সোনার পাথরবাটির মতো কথা। সেক্সকে দূরে সরিয়ে কাউকে প্রেম কর'ব বা ভালবাসবো কি ভাবে? কি উপায়ে? কিন্তু এমন ভাবনা একশ্রেণীর লোকের আছে। আমাদের সমাজে এখনও চরিত্রের মাপকাঠি হিসাবে সেক্সুয়াল প্রবৃত্তিকেই ধরা হয়। একটা লোক সমাজে যত খারাপ কাজই করুক না কেন, হয়তো সে কাউকে ঠকিয়ে সর্বস্বান্ত করেছে, মা বাবার কথায় বৌ'কে টর্চার করে অথবা বউয়ের কথায় মা-বাবাকে দেখেনা, ঈর্ষাপরায়ণ এইরকম হাজার দোষে দুষ্ট হলেও লোকটির যদি পরকীয়া বা মেয়ে ঘটিত কোন দোষ না থাকে তাহলেই সবাই বলে যাই হোক লোকটার ক্যারেক্টার ভাল। আবার অন্যদিকে একজন সৎ, উদার, পরোপকারী, পরদুঃখে কাতর, বাবা-মায়ের প্রতি দায়িত্বশীল, ভাইদের মানুষ করতে গিয়ে নিজের সন্তানের দিকে তাকাননি কিন্তু একসাথে দুটি মেয়ের প্রতি দুর্বল অথবা কোন বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা মহিলাকে ভালোবাসেন ফলে সমাজের চোখে তিনি হয়ে যান লুজ ক্যারেক্টার বা দুশ্চরিত্র। এর বিরুদ্ধে প্রথম আওয়াজ তোলেন বুর্জোয়া মানবতাবাদীরাই । তারাই প্রথম বলেন সেক্স নিয়ে অত মাথা ঘামানোর কি আছে? মানুষের চরিত্রের আরও পাঁচটা দিক দেখো।
----------------------------------------
সমাজে যৌনতা সম্পর্কে আগ্রহী কিন্তু সাহসহীন একধরনের লোক আছে তাদের যৌন ইচ্ছা ভেতরে প্রবলভাবে বিরাজ করলেও সাহসের অভাব এবং পলায়নবাদী মনোবৃত্তির জন্যে সেটাকে ভেতরেই চেপে গুমরে মরে এবং বাইরে সেক্স বহির্ভূত জীবনের কথা বলেন। এদের আবার একটা গালভরা নাম আছে প্লেটোনিক লাভার । আরেক ধরনের লোক আছে যাদের যত সাহস শুধু যৌনতাকে কেন্দ্র করে। এমনিতে কোন সামাজিক অবিচারের প্রতিবাদ করার এদের সাহস নেই। লাঠি হাতে একটা পুলিশ দেখলে পালিয়ে যায়। শুধু বিপরীত লিঙ্গ দেখলেই খাই খাই ভাব এবং যৌনতা বিষয়ে এদের মনোভাব উদ্দেশ্যহীন ও বেপরোয়া। এদের বলে লম্পট। প্লেটোনিক লাভার এবং লম্পট উভয়েই যৌনদাস। প্লেটোনিক লাভারেরা মানসিক রোগে ভোগে। অন্যদিকে লম্পটদের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি যৌনতার লোভ দেখিয়ে কাজে লাগায় প্রগতিশীলতার বিরুদ্ধে । প্লেটোনিক লাভারেরা হল আচরন সর্বস্ব ব্যক্তি। এরা মানুষের প্রাণবন্ত ও উদার দিকগুলো দেখতে পায় না। এরা সেক্সকে জোর করে দমন করে। প্লেটোনিক লাভার এবং লম্পট উভয়েই দুটো পরস্পর বিরোধী দিক থেকে সেক্সকে অস্বাভাবিক রূপে গ্রহণ করে।
সুস্থভাবে সেক্সকে গ্রহণ করার অর্থ হল নিজের ভালোবাসা প্রেম বা আবেগের ক্ষেত্রে সেক্সের ভূমিকা এবং প্রয়োজনীয়তাকে সঠিকভাবে বুঝতে পারা।"
বুধবার, ৮ মে, ২০১৯
প্রেম ও যৌন সম্পর্কঃ মার্ক্সবাদী দৃষ্টিভঙ্গি

Tags
Artikel Terkait
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
EmoticonEmoticon