বুধবার, ১২ জুন, ২০১৯

ইয়েলো স্ট্রিটের পথ ধরে কামালউদ্দিন নিলু

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সমাজতন্ত্রের পক্ষের মানুষ ছিলেন না। কিন্তু তিনি সোভিয়েত রাশিয়া ঘুরে এসে লিখলেন চিঠি সংকলন 'রাশিয়ার চিঠি'। তিনি সোভিয়েত রাশিয়াকে দেখে সমাজতন্ত্রের প্রতি মুগ্ধতা প্রকাশ করেছিলেন সেই চিঠিগুলোতে। সেই সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিলো কমরেড স্তালিনের শাসনামল।

খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন জানালেন সমাজতন্ত্রের প্রতি তার সমর্থন এবং সেটাও কমরেড স্তালিন পরিচালিত সোভিয়েত ইউনিয়ন দেখে।

যেহেতু আধা এশীয় এবং শ্রমিক শ্রেণী থেকে উঠে আসা স্তালিনের একক কৃতিত্ব ইউরোপের সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা রাষ্ট্র থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ১০ বছরের মধ্যে ইউরোপের সবচেয়ে শিল্পোন্নত রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করেছিলেন,
যেহেতু কমরেড স্তালিন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করার মূল নায়ক হয়ে উঠেছিলেন,
যেহেতু কমরেড স্তালিন বিচক্ষণতার সাথে একাই ধূলিসাৎ করেছিলেন সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একক পারমানবিক শক্তি হয়ে ওঠার উচ্চাভিলাষ

তাই পুঁজিবাদী মালিকশ্রেণীর রাষ্ট্রগুলো কমরেড স্তালিনের নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা করতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেনি। কমরেড স্তালিনকে নিয়ে নিয়মিত মিথ্যাচার করা নিউইয়র্কের পত্রিকা 'ইয়েলো স্ট্রিট'এর সীমাহীন মিথ্যা সাংবাদিকতার কারনেই 'ইয়েলো জার্নালিজম' কথাটির জন্ম।
সেইসব মিথ্যাচার বহু আগেই প্রকাশিত যে পশ্চিমা বিশ্বে ধূর্ত কেউ এখন আর স্তালিনকে নিয়ে বানোয়াট অভিযোগ এনে অপদস্থ হতে চায় না সেধে সেধে।

বাংলাদেশের নাট্যব্যক্তিত্ব কামালউদ্দিন নীলু 'স্তালিন' নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ করেন সেইসব মিথ্যাচারকে সামনে এনে। দর্শকরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদের মাধ্যমে সেই মিথ্যা প্রোপাগান্ডামূলক নাটক মাঝপথেই পণ্ড করে দেয়।

যেই পশ্চিমারা ধরা খাওয়ার ভয়ে কমরেড স্তালিনকে নিয়ে মিথ্যাচার করার আহাম্মকি করে না এখন আর সেখানে কামালউদ্দিন নিলু সেই বিতর্কিত মিমাংসিত ইস্যু কেন সামনে এনেছেন তা স্পষ্ট নয়।

এইসমস্ত চাটুকার বুদ্ধিবেশ্যা সমাজতন্ত্র ও এর নায়কদের বিতর্কিত করে তাদের নামে মিথ্যাচার বাজারজাত করে শোষকশ্রেণীর আনুকূল্য পাওয়ার চেষ্টা করে ক্ষমতার হালুয়ারুটির উচ্ছিষ্ট পাওয়ার আশায়। সেই প্রেক্ষিতে কামালউদ্দিন নীলুর এই ধান্দাবাজি দেখে মজা পেলাম এইজন্যই যে বামপন্থীরা আগামীতে বাংলাদেশে শোষকশ্রেণীর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর তাই নীলুরা উঠে পড়ে লেগেছে শোষকশ্রেণীকে তোয়াজ করে তাদের নীল বিষ ছড়াতে।

বুদ্ধিবেশ্যা নীলুরা ভেবেছে এই দেশের মানুষ যেহেতু বই পড়ে জানার চেয়ে মাল্টিমিডিয়া থেকে জানতে বেশি আগ্রহী, এই দেশের মানুষ যেহেতু হাদীস কোরান না পড়ে ঝাকির নালায়েকদের ওয়াজ থেকে শিক্ষা পেতে বেশি আগ্রহী তাই নাটক, মঞ্চনাটক, সিনেমা দিয়ে সমাজতন্ত্র ও সমাজতান্ত্রিকদের বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারবে।
কিন্তু নীলুরা যেহেতু শ্রেণী দৃষ্টিভঙ্গীহীন তাই তারা ভুলে গেছে এই দেশে লেখাপড়া করা লোকজনই মঞ্চনাটক দেখে তাই তারা এই মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ প্রোপাগান্ডা নির্ভর নাটকের প্রতিবাদ জায়গায় করেছে। যতবার মঞ্চস্থ করবে ততবার হবে।

একদিক দিয়ে ভালোই, বর্তমান আধাসামন্তবাদী সাম্প্রদায়িক ও লুটপাটতান্ত্রিক বাংলাদেশে স্তালিন খুবই প্রাসঙ্গিক। মিথ্যাচারের মাধ্যমে স্তালিনকে সামনে আনুক, মানুষ আগ্রহী হোক, শ্রেণীসংগ্রামের চেতনা জাগ্রত হোক।

শেষ করছি কমরেড স্তালিনের একটি বাণী দিয়ে-
অনেকেই আমার সমাধির উপর জঞ্জাল ফেলার চেষ্টা করবে, কিন্তু ইতিহাসের দমকা হাওয়া সেই জঞ্জাল ঝেঁটিয়ে সাফ করে দিবে।


EmoticonEmoticon