ইতিহাস একজন মহান শিক্ষক।তাই এই শিক্ষকের শিক্ষা নেওয়াটা যেমন অতীব জরুরি তেমনি এই শিক্ষার সঠিক ব্যাখা থাকাটাও প্রয়োজনীয়। ইতিহাসের এই শিক্ষার একটা বড় দূর্বলতা হলো - কেবল ঘটনাপুঞ্জের সমষ্টি কিংবা ব্যক্তির ভুমিকাকেই উপজীব্য করে ইতিহাসের ব্যাখা তৈরী করা হয়।বাস্তবিকপক্ষে ইতিহাস তেমন ঘটনা কিংবা ব্যক্তিনির্ভর বিষয় নয়।এর মূলে রয়েছে সমাজে বিদ্যমান শ্রেণিসমূহের দ্বন্দ্ব ও ঘটনার আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট।
৭৫'র এই পটভূমিতেও রয়েছে শেখ মুজিবের স্বপরিবারে হত্যার নির্মম বাস্তবতা। মূলতঃ চারটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্ব এই ঘটনার প্রেক্ষিত তৈরী করেঃ
ক). স্বাধীনতাত্তোর শাসক আঃলীগ দলের আভ্যন্তরীণ সংকট। বিশেষত: শেখ মুজিব পরিবারের সাথে আঃলীগের বাকি অংশের দ্বন্দ্ব।
খ).মুজিব প্রবর্তিত রক্ষীবাহিনীর সাথে তদানীন্তন সেনাবাহিনীর দ্বন্দ্ব।
গ). নব উত্থিত লুটেরা ব্যক্তিপুজিঁর সাথে রাষ্ট্রীয় পুঁজির দ্বন্দ্ব।
ঘ). রুশ-ভারত বলয়ের সাথে মার্কিন-পাক বলয়ের দ্বন্দ্ব।
এই দ্বন্দ্বসমুহের একক ও সামষ্টিক নানামুখী সংঘাত এবং বৈরীমূলক সম্পর্কের ফলাফলই হচ্ছে- ১৫ আগস্ট।
শেখ মুজিব সফল নেতা নাকি বিফল নেতা- এইভাবেও দেখাটা ভুল।কারণ বিষয়টা সফলতা বা বিফলতার বিষয় নয়।বিষয় এবং বস্তুটি হচ্ছে- শ্রেনির অবস্থান,ভূমিকা ও সীমাবদ্ধতা।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি প্রায় উপনিবেশিক শোষণ ও আধিপত্য থেকে জাতিগতভাবে বাঙালী জাতির মুক্তি ঘটলেও শ্রেণিশোষণ ও আধিপত্যের অবসান হয় নি। যুদ্ধে লড়াই করেছিল জনগণ কিন্তু স্বাধীনতা পেয়েছিল নব্য বাঙালি ধনিকগোষ্ঠী।আর তাদের কাছে পরাধীন থেকেছে শ্রমিক- কৃষক সহ গ্রাম-শহরের সাধারণ মানুষ। এই স্বাধীনতাপ্রাপ্ত শ্রেণি আবার সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দীর সেই রেনেসাঁযুগের ইউরোপিয় বুর্জোয়াদের মতন প্রগতিশীল ছিলো না।ছিলো না সামন্ততন্ত্র, রাজতন্ত্র ও গীর্জাতন্ত্রের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াইয়ের অঙ্গিকার।ক্ষমতায় আরোহণ, স্থায়ী ও পাকাপোক্তকরণে প্রতিনিয়ত তাদের আপোষ এবং আতাঁত করতে হয়েছে সাম্রাজ্যবাদ ও স্বাধীনতা বিরোধী অন্যান্য প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির সাথে।ফলে অপূরিত থেকেছে মুক্তিযুদ্ধে ঘোষিত- সাম্য, ন্যয়বিচার ও মানবিক অধিকারের মৌলিক নীতি ।
সদ্যোজাত দেশটির জনগণের শাসন ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হয়ে অধিষ্ঠ হলো একক ও ব্যক্তি কতৃর্ত্ব।৭৩'র নির্বাচন ঘুরে ক্রমশ তা বাকশালীয় স্বৈরশাসনে রুপ নিলো। ৭০'র নির্বাচনে যে আঃলীগ পাকিস্তানীদের বিপক্ষে নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছিলো, স্বাধীন দেশে তাদের কারচুপি, ভোটকেন্দ্র দখল ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ে নামতে হলো। কালোবাজারি,মজুদদারি, বিদেশি ঋণ ও সহযোগিতা তসরুপের প্রতিযোগিতায় দিশেহারা জনগণের মুক্তির স্বপ্নভঙ্গ ঘটতে লাগলো।
অন্যদিকে পুজিঁর ধর্মই তো- সকল কিছু গ্রাস করা।এবং সে যত খেতে পায় ততই তার ক্ষিধে বাড়ে।এই নিয়মেই, নতুন শাসকগোষ্ঠীর চাহিদামত পথ সৃষ্টি করা ছাড়া শেখ মুজিবের অন্যপথ খোলা ছিলো না।
তিনি সমাজতন্ত্রী ছিলেন না, ছিলেন বুর্জোয়াশ্রেনির প্রতিনিধি ও নেতা; কিন্তু বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও জনগণের মাঝে আবেদন লক্ষ্য করে সমাজতন্ত্রের কথা বলার বিকল্প ছিলো না। ৭২ থেকেই মুক্তিযুদ্ধের বদলে নব্য ধনিকদের আশাআকাঙ্খা পূরণ করাই ছিলো তাঁর দায়িত্ব। তিনি সমাজতন্ত্রের নামে জাতীয়করনের উদ্যোগ নিলেন, কিন্তু 'ইনভেন্ট্রি' ছাড়া এই কার্যক্রম একদল আমলা-সচিব ও কর্মকর্তাদের মাইনে চাকুরে থেকে বানিয়ে দিল লুটপতিতে। পাকিস্তানি ২২ পরিবারের রেখে যাওয়া সম্পদের চেয়েও অধিক সম্পদ তারা তৈরী করলো এই প্রক্রিয়ায়।তবে সেই মিল-ইন্ডাস্ট্রিগুলো পরিচালন,সংরক্ষণ সহ যাবতিয় দায়দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা-দক্ষতা না থাকায় প্রাথমিকভাবে এই কাজটা জাতীয়করণের নামে রাষ্ট্রীয় তদারকিতেই করা হয়।এইভাবেই রাষ্ট্রীয় পুজিঁর ছত্রছায়ায় জন্ম নিতে থাকে ব্যক্তিপুজিঁর বীজ, আর এই দ্বন্দ্বই অর্থনৈতিকভাবে তৈরী করে ৭৫'র আগস্ট হত্যাকান্ডের মঞ্চ।
অর্থনৈতিক এই শোষণ-লুন্ঠনের প্রক্রিয়ায় আদিম পুজিঁ সংগৃহিত হতে থাকে যার ফলে সবচে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সাধারণ মানুষ- মুক্তিযুদ্ধে যাদের আকাঙ্খা ছিলো শোষণহীন সমাজ, বৈষম্যহীন দেশ ও ধর্মনিরপেক্ষক্ষ রাষ্ট্র। উল্লেখ্য স্বাধীনতাত্তোর শাসকশ্রেণী, দল ও তার নেতৃত্বের কখনোই সেই আকাঙ্খা ছিলো না।
ফলে লুটপাটের অর্থনীতি গড়ে উঠতে থাকে।চালের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে আট আনা/ এক টাকা থেকে ১০/১২ টাকায়। বাজারে তীব্র খাদ্য সংকট ও উত্তরবঙ্গে মঙ্গা পরিস্থিতি তৈরী হয়।আদমজী, টঙ্গী,বাড়বকুন্ড, খালিশপুরে দেখা দেয় শ্রমিক অসন্তোষ ও তা ঠেকাতে লাগিয়ে দেয়া হয় শ্রমিকা দাঙ্গা।৭৪'য়ে দেশে লেগে যায় দূর্ভিক্ষ।সরকারি হিসেবেই মারা যায়- ২০/৩০ হাজার মানুষ।বেসরকারি তথ্যমতে- তা লাখ ছাড়িয়ে যায়।কবি রফিক আজাদ ক্ষেপে গিয়ে লেখেন- "ভাত দে হারামজাদা! না হলে মানচিত্র খাবো।"
এই জনরোষ ঠেকাতে এবং বুর্জোয়া শ্রেনির গড়স্বার্থ রক্ষার্থে স্বাভাবিকভাবেই মুজিব সরকারের বিকল্প খুজঁতে থাকে এই চার বছরের গজানো শ্রেণীটি। কিন্তু রক্ষীবাহিনী দ্বারা আচ্ছাদিত বাকশালী বর্ম ভেদ করে প্রবল প্রতাপশালী নেতা ও পরিবারকে গণতান্ত্রিকভাবে সরানোর সূত্র ও রাজনৈতিক শক্তি তাদের হাতে ছিলো না। তাই তারা বেছে নিলো সামরিক ক্যুদেতা ও মোশতাকের মতো প্রাসাদ ষড়যন্ত্রীদের।
৭২ সালে ব্যক্তিপুজিঁর সিলিং নির্দ্ধারণ করা হয় ২৫ লক্ষ টাকা।মাত্র দুবছরের মাথায় ৭৪ সালে মুজিব সরকারই সেটা ৩ কোটি টাকায় উন্নীত করে।২ জন মাত্র কোটিপতি থেকে ৭৪-৭৫ সালে কোটিপতির সংখ্যা ৪৭ জনে এসে দাঁড়ালো।এতেই বোঝা যায়- কি তীব্র অর্থনৈতিক শোষণ ও লুন্ঠন প্রক্রিয়া চালু হয়েছিলো। আর এই ধনবৈষম্য ও বৈভব বৃদ্ধির রাজনৈতিক শক্তির কেন্দ্রে ছিলো শেখ মুজিব ও তাঁর বৃত্তবন্দী অনুগত দলীয় অংশ। শেখ মুজিব স্বয়ং এই বৃত্তের পরিধি এতো ছোট করে এনেছিলেন যে তাতে উঠতি লুন্ঠনজীবীদের স্থান হচ্ছিলো না। ফলে এই পরিধি বৃদ্ধির তাগিদে নতুন ভারকেন্দ্র পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আর তা ঘটে খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও আঃলীগের অন্য অংশের যোগসাজশে। মোশতাক ক্ষমতায় এসে এই ব্যক্তি মালিকানার সিলিং ১০ কোটি টাকায় করার সুযোগ দিয়ে এই দ্বন্দ্ব নিরসন করে বৃত্তের আওতা বৃদ্ধি করে।
১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীর প্রবর্তন ঘটে। নাম দেয়া হয় 'জাতীয় রক্ষীবাহিনী' (জে আর বি)। যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুজিব বাহিনী ও কাদেরিয়া বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত এই বাহিনী ছিলো ৮০০০ সদস্যের নিয়মিত আধা-সামরিক বাহিনী।এর মাস্কেট ঠিক করা হয়- "মুজিবের তর্জনী"। ক্যাপ্টেন নুরুজ্জামানকে প্রধান করে এই বাহিনীর উদ্দেশ্য রাখা হয় বিদ্রোহ ও মুজিববিরোধী মত দমন বিশেষত বামপন্থা নিধন।যত দিন যেতে লাগলো শেখ মুজিব তত বেশি রক্ষীবাহিনী নির্ভর হয়ে যেতে লাগলেন।আর ততই বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন জনগণ থেকে।যে জনতা তাঁর ডাকে জীবন বাজি রেখে একদিন যুদ্ধে গেলো সেই জনতার ডাক আর তাঁর কানে পৌঁছলো না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হয়ে পড়েছিলেন ব্যক্তি মুজিব, নেতা শেখ মুজিবর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন শাসক মুজিবরে। আবার প্রায় রাজকীয় মর্যাদায় আসীন ও রাষ্ট্রপ্রধানের একান্ত বাহিনীতে রুপান্তরে তৈরী হয় সেনাবাহিনীর সাথে রক্ষীবাহিনীর দ্বন্দ্ব।রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের নানা সুযোগ সুবিধা ও গুরুত্ব বৃদ্ধির ফলে বুর্জোয়া রাষ্ট্রের অন্যতম অঙ্গ সামরিক বাহিনীর এই দ্বন্দ্ব ৭৫'র পটভূমি রচনায় ক্রীড়নক ভূমিকায় নিয়ে আসে।তারই কয়েকজন কুশীলব ফারুক, রশীদ ও ডালিম সহ অন্যান্য সেনাসদস্যরা। সেনাবাহিনী নিজের অস্তিত্ব সংকটে ভুগতে থাকে। এদের মধ্যে ছিলো সেই সব অফিসারেরাও যারা ৭১ সালে যুদ্ধই করে নি।আগস্ট হত্যার ভিতর দিয়ে এই দ্বন্দ্ব মিমাংসিত হয় এবং মোশতাক দ্বারা সেনা কতৃর্ত্বে রক্ষীবাহিনী বিলুপ্ত হয়।
সেনা অসন্তোষের ও স্বার্থের নানা দ্বন্দ্ব এদেশের রাজনীতিতে প্রবেশ করে মুজিব হত্যার হাত ধরে যার ফলাফল পরবর্তী জিয়া-এরশাদ ও ফখরুদ্দীন- মঈনুদ্দীনের মতন অনির্বাচিত- অগনতান্ত্রিক শক্তি সরকার ও শাসনকাঠামো।অবশ্য বুর্জোয়ারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে ও তাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সমাধানে এই খুুনাখুনির রাস্তা কিংবা ষড়যন্ত্রের কানাগলির পথ ছাড়া বিকল্প কিছু নেই।মোশতাক ও তার সহযোগীরা এই প্রক্রিয়ারই ফলাফল।
আন্তর্জাতিক পুঁজির সাথে গাঁটছড়া বাঁধা কিংবা সহযোগিতা ছাড়া সাম্রাজ্যবাদী-পুঁজিবাদী বিশ্বে কোন দেশের বুর্জোয়ারা টিকতে পারবে না। তা সে স্বাধীন বা কম্প্রাডর যাই হোক, এককভাবে টিকতে পারা যাবে না। স্বাধীনতার পর দেশ যেহেতু পুঁজিবাদী নিয়মেই চলছে, ফলে মুজিব সরকার ও শাসকশ্রেণি সেই পথেই এগুতে থাকে। ওআইসি(OIC) সন্মেলনে যোগ দিয়ে মার্কিন-পাক-সৌদী বলয়ের দিকে পা বাড়ালেও রুশ-ভারত বলয়ের প্রভাবাধীন মুজিবকে দিয়ে তা পুরোপুরি সম্ভব হচ্ছিলো না। তাই তাদের ও প্রয়োজন হয়ে পড়ে ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের।আর এ কারণে ব্যক্তিত্বের বলিষ্ঠতা ও চরিত্রের দৃঢ়তায় কোন দিক দিয়েই মুজিবের সমকক্ষ ও বিকল্প না হলেও তারা খুঁজে নেয় পাক-মার্কিন ঘেঁষা মোশতাককে। বুর্জোয়া শক্তি এসব জনবিরোধী নানা আতাঁত-আপোষ প্রক্রিয়ায় মোশতাক ও সামরিক চক্রের উপর ভর করে।
বুর্জোয়াশ্রেণি ও তাদের শ্রেণিস্বার্থ কতটা নিষ্ঠুর ও চতুর তার প্রমাণ মেলে এই হত্যার ঘটনায়।ক্যুদেতাদের ষড়যন্ত্রের শিকার না হলেও মুজিব শাসনের পতন ঘটতো জনগণের ধূমায়িত বিক্ষোভে।এতে তাদের হাতে হয়তো ক্ষমতা নাও থাকতে পারে।গণরোষ থেকে ঘটে যেতে পারে গণভ্যুত্থান- এই বিপদ আশংকায় তাদেরকে স্ব-পরিবারে মুজিব হত্যার পথে প্ররোচিত করে।সৃষ্টি করে মোশতাক চরিত্রের রাজনৈতিক নেতাদের,যার ছায়া পড়েছে আজকের বড় দলগুলোর সাংসদ ও নেতাদের গায়ে।
সেইদিনের এই রাজনৈতিক শূণ্যতা পূরন করতে পারতো এদেশের বামপন্থিরা।দেশে তখন আঃলীগ ছাড়া বামরাই ছিলো একমাত্র রাজনৈতিক শক্তি।মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক শক্তি স্বাধীনতাবিরোধী হওয়াই ছিলো গণধিকৃত ও নিষিদ্ধ।পরবর্তী সময় জিয়াউর রহমানের হাত ধরে রাজনীতিতে তাদের অনুুপ্রবেশ ঘটে। অন্যদিকে বামপন্থিরা ছিলো - বিভক্ত, বিলুপ্ত ও বিভ্রান্ত।
আত্মসমর্পণকারী ভুমিকা ও হঠকারী কার্যকলাপ এবং পরবর্তিতে সুবিধাবাদী খালখননে বামদের শক্তি ক্ষয় হয়ে পড়ে।আর এই সুযোগে জনবিচ্ছিন্ন বুর্জোয়া শিবির দম ফেলার উপায় খুঁজতে থাকে। সামরিক আলখাল্লায় নিজেদের পূর্ণগঠন ও সুসংগঠিত করে তোলে।
শেখ মুজিবের সফলতা-বিফলতার কিংবা মোশতাক ও জিয়ার শঠতা-কুটিলতার হিসেব নিকেষ করতে হবে এই শ্রেণি অবস্থানের নিরিখেই। তাদের শ্রেণি ঘ্রাণশক্তি ও স্বার্থ বিবেচনা ছিল নির্ভুল। বামপন্থিরা না পারলেও আপন শত্রু-মিত্র নির্দ্ধারণে বুর্জোয়ারা ভুল করে নি। আর এই ৭৫'র পথরেখায় একদলীয় বাকশাল, সামরিক শাসন,জরুরি অবস্থা জারি, দ্বি-দলীয় পার্লামেন্ট কাঠামোর বিভিন্ন রুপ ও চেহারায় তৈরী করেছে আজকের বাংলাদেশ।
#পরিশেষে রবীন্দ্রনাথের 'সভ্যতার সংকট' রচনায় উল্লেখিত মনুসংহিতার বাণীতে আমরা যেন খুঁজে পাই সেই ইতিহাসের সঠিক শিক্ষা-
আপাতত বাড়ে বল অধর্মের দ্বারা,
অধর্মেই আপনার ভালো দেখে তারা।
এই পথেই শত্রুদের পরাজিত করে,
শেষে কিন্তু একদিন সমূলেই মরে।
EmoticonEmoticon