সমাজে পুরুষ নারীকে কোন দৃষ্টিতে দেখবে তা নির্ধারণ করে
দেয় সমাজ ব্যবস্থা। নারীর প্রতি পুরুষের প্রতি ক্ষনে ক্ষনেই দৃষ্টি পরিবর্তিত হয়
প্রথা,কৃষ্টি,সংস্কৃতি ও সমাজ ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে। এবং জৈবিক পরিবর্তনের মাঝে
দিয়েও বটে। এটা সত্য যে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বিভিন্ন প্রথা ও ধর্মের একগুয়েমিকতার
কারনেই পুরুষ প্রথম নারীকে যৌন বস্তু ছাড়া অন্য দৃষ্টিতে দেখার সার্মথ্য হারিয়ে
ফেলে। এই হারানো দৃষ্টিকে ফেরাতে হলে সমাজ ব্যবস্থার বড় ধরণের পরিবর্তন আনা যেমন
অতি জরুরি তেমনি দরকার একটা সেক্যুলার
সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলার জন্য একদল সংগ্রামি সৈনিক।মা-এর ভূমিকা যে কি পরিমান একটা
সন্তানকে বড় করে তুলার ক্ষেত্রে এই কথা সকল মানুষেরই জানার কথা নয় বরং জানে। মাও
তো নারী আর সমাজে নারীকে একটি শিশু ছেলেবেলা থেকে যৌবণে পর্দাপণ কালে কোন দৃষ্টিতে
দেখে? যদি প্রশ্ন তোলা হয় উত্তর আসবে যে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে। এবং ক্ষণে ক্ষণে
দৃষ্টি-ভঙ্গির পরিবর্তনও হয় বটে। একজন ছেলে নারীকে ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখে নাকি
দেখানো হয়? আমি বলব দেখানো হয়। ছোট কালে মা,দাদি,নানি,মাসি,পিসি, ও বোনদের কোলে
পিঠে বড় হলাম।সেই নারীদের মতো অন্য নারীদের পর্ণ মুভি দেখলাম হলে গিয়ে ১২-১৩ বছর
বয়সে যাকে বলে এক টিকেটে দুই ছবি। আর কোনো কিছু বুঝার হয়ত বাকি রইলো না, যে নারীদের সাথে এমন কর্ম করার জন্যেই পুরুষ
ঘুরাঘুরি করে অলিতে-গলিতে আনাচে-কানাচে, প্রেমের জন্য বাহানা ধরে নিজের হস্তদয়
কেটে চিঠিও লেখে,ফ্যাশন করে বান্ধবিকে গার্লফ্রেন্ডে পরিনত করার জন্য। যখন যৌবনে
পদার্পণ করলাম তখন সমাজের আর অন্য দশটা ছেলের মত করেই চুটিয়ে প্রেম শুরু করলাম
মেয়েদের সঙ্গে হয়ে উঠলাম এক নারী প্রেমিক। এমন করে হঠাৎই জীবনে আসলো নতুন আরেক অধ্যায়। ধর্মপ্রাণ মুসলিম সমাজ ধরে
বুঝিয়ে নিয়ে গেল মসজিদে,ভাল লাগতে শুরু হল হুজুরদের কথা।
প্রতিনিয়তই শুনতে থাকলাম যে, যৌবন কালে এবাদৎ করে তার জন্য
আল্লাহর বেহেস্তের সকল দুয়ার খোলা। যৌবনের এবাদৎ নাকি সর্ব শ্রেষ্ঠ এবাদৎ। ছেলেরা
যৌবনে এবাদৎ করতে চায়না শয়তানের কুমন্ত্রায়। নারী শয়তানের ধারক ও বাহক ইত্যাদি
ইত্যাদি। মনে হলো কথা সত্য এই বয়সে তো এবাদৎ করার কথা আমার আমি কেন ঘুরি-ফিরি
মেয়েদের পিছনে? নিশ্চিই মেয়েরা শয়তানের এক অংশ,ধর্মীয় দৃষ্টি থেকে এটা বুঝতে বাকি
রইলনা যে যৌন কর্ম এটা অপবিত্র কর্ম ছাড়া আর কিছুই না, যখন শুনলাম আমরা সকলেই পয়দা
হয়েছি একফোটা অপবিত্র পানি থেকে। অন্য দিকে যে নারীদের আদরে স্নেহে ভালবাসায় বড়
হলাম তাদের মত নারীদের উলঙ্গ দেহ দেখলাম পর্ণ ভিডিওতে। এতে যেমন নারীদের যৌণবস্তু
ভাবতে শুরু করলাম তেমনি ধর্মিয় দিক থেকে নারীকে দেখতে শুরু করলাম শয়তানের হাতিয়ার
হিসেবে দুইয়ে মিলে এক হয়ে পরিবর্তন আনলো আচরনে। নারীকে দেখতে শুরু করলাম নারী
হিসেবে মানুষ হিসেবে নয়।
এখন কথা হলো বর্তমান সময়ে নারীরা পুরুষের সমমানের কোন কর্ম
করতে পারেনা যে এটা ভাবা এক ধরনের মহা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। কারন নারীরাও পারে
পুরষের জ্ঞান-বিজ্ঞান সমাজ সংস্কার করতে তা আজ প্রমাণিত। এই একুশ শতকে নারীদের
মানুষ না ভাবা-ভাবনা যারা সমাজে বিস্তার করে তাদের বয়কট করা ছাড়া আধুনিক সমাজ গড়ার
চিন্তা এক অবান্চনিয় ধারনা। কারা সমাজে নারীদের মানুষ হিসেবে দেখতে বাধা দেয় তা
কিন্তু কোন গোপনীয় ঘটনা নয় বুঝতে।
এইতো কিছু দিন আগে আমাদের দেশের এক মুরুব্বি যিনি যথারিতিই
বললেন নারীরা তেতুলের মত, এদের দেখলে পুরুষের লালা ঝড়বে এটা স্বাভাবিক। আরেকজন
হুজুর তিনি বলেছিলেন যে, নারীরা যেভাবে বাহিরে চলাফেরা করে এতে যদি কোন ছেলে
নারীকে যৌন হয়রানি নাকরে তাহলে এটাই বুঝা যায় যে সমাজে ছেলেদের পুরুষত্ব নেই, বা
যৌণ কর্মে অক্ষম। দেশ স্বাধীন হবার পর থেকেই ক্রমে ক্রমে কখনো গাণিতিক কখনো
জ্যামিতিক হারে এ দেশ ধর্মিয় আগ্রাসনে পরিণত হয়েছে।ধর্মীয় দোহাই হল বর্তমানে
এদেশের এখন সব থেকে বড় সংবিধান। এর প্রমান এইযে কিছুদিন আগে ক্ষমতাসিন দল ছিল
হেফাজতে ইসলাম এর চির শত্রু আর এই মুহুর্তে হেফাজত আর ক্ষমতাসিন দল একে অপরের উপর
নির্ভরশীল, এটা হয়তো অনেকে বলবে যে, ভোটের কারনেই হয়েছে পরানে পরান মেশানো। আমি
বলি না। এর পিছনে বড় মাপের এক কারন আছে সেটা হল কিকরে নারীদের দাসিতে পরিনত করাযায়
তার এক রণ কৌশল বটে। ইসলামি বিধান অনুযায়ী
হেরেম শরীফ কিন্তু অবৈধ নয়। আর হেরেমে যে কি কর্ম-কান্ড চলে তা ইসলামের
ইতিহাস যারা পড়েছেন তারা ভাল করেই জানে। আর যারা পড়েনি ইসলামের ইতিহাস তারা সুলতান
সুলেমান সিরিয়াল নাটকটাই দেখে নিতে পারেন কিছুটা বুঝতে পারবেন। ইসলামি
সাম্প্রদায়িকতার মাঝেও মুক্তি-যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এখনো নারীরা সমাজ/দেশ
পরিচালনা করছে এটা সত্য কিন্তু এদেশ কতটা নারীর মুক্তির থিসিস তৈরী করেছে?
কিছুই করেনি এই থিসিসয়ই আবিস্কার করেছে আমাদের
প্রধাণমন্ত্রী বলেছেন- নারী স্বাধীণতা চাইলেই তো আর পাওয়া যাবেনা, স্বাধীণতা আদায়
করে নিতে হবে। তারপর তিনিই আইন করেছেন যে যদি কোন ব্যক্তি কোন নারীকে ধর্ষণ করে
এবং বিবাহ করতে চায় হোক সে নাবালক তবুও সেটা আইন সম্মত।
নারীদের সমাজে যে অবহেলা করা হয় তা কোন আইন করে রোধ করা
যাবে কিনা তা আমি জানি না। তবে এটা জানি যে, বায়োলজিক্যাল সমাজ গড়া ছাড়া কোন ক্রমেই
নারিদের মুক্তি সম্ভব নয়।নারী মুক্তির জন্যে শিক্ষ্যায় পরিবর্তন আনাটা খুবই জরুরি।
এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ও এটা আনা দরকার কারন বর্তমান সময় এদেশে নারী পুরুষ প্রায়
সমান এতে যদি কোন ফতোয়া,প্রথা,সমাজ ব্যাস্থার ফলে নারীরা গৃহবন্দী হয়ে পরে তাহলে
এই একুশ শতক হবে মধ্যে যুগে পরিণত ।
EmoticonEmoticon