রোহিঙ্গারা পশ্চিম মায়ানমারের রাখাইন স্টেটের উত্তরাংশে বসবাসকারী একটি জনগোষ্ঠী। ধর্মের বিশ্বাসে এরা অধিকাংশই মুসলমান। রাখাইন স্টেটের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হল রোহিঙ্গা। মায়ানমারের সরকারী হিসেব মতে, প্রায় আট লক্ষ রোহিঙ্গা আরাকানে বসবাস করে। রোহিঙ্গারা বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীগুলোর একটি।
মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মায়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। মায়ানমার সরকার ১৩৫ টি জাতিগোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, রোহিঙ্গারা এই তালিকার অর্ন্তভুক্ত নয়। মায়ানমার সরকারের মতে, রোহিঙ্গারা হল বাংলাদেশী, যারা বর্তমানে অবৈধভাবে মায়ানমারে বসবাস করছে। যদিও ইতিহাস ভিন্ন কথা বলে। ইতিহাস বলে, রোহিঙ্গারা মায়ামারে কয়েক শতাব্দী ধরে বসবাস করে আসছে।
সপ্তম-অষ্টম শতাব্দীতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়। প্রাথমিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যীয় মুসলমান ও স্থানীয় আরাকানীদের সংমিশ্রণে রোহিঙ্গা জাতির উদ্ভব। পরবর্তীতে চাঁটগাইয়া, রাখাইন, আরাকানী, বার্মিজ, বাঙালী, ভারতীয়, মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানুষদের মিশ্রণে উদ্ভুত এই সংকর জাতি এয়োদশ-চর্তুদশ শতাব্দীতে পূর্ণাঙ্গ জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। পঞ্চদশ শতাব্দী হতে অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত আরাকানে রোহিঙ্গাদের নিজেদের রাজ্য ছিল।
মায়ানমার সরকারের দাবি, রোহিঙ্গারা হল ভারতীয়, বাঙালী ও চাঁটগাইয়া সেটলার, যাদেরকে ব্রিটিশরা আরাকানে এনেছে। যদিও ঐতিহাসিকভাবে এটি প্রতিষ্ঠত যে, ব্রিটিশরা বার্মায় শাসক হিসেবে আসার কয়েক শতাব্দী আগে হতেই রোহিঙ্গারা আরাকানে পরিষ্কার জাতি হিসেবে বিকশিত হয়েছিল।
মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকার না করায় সকল প্রকার নাগরিক ও মৌলিক সুবিধা হতে বঞ্চিত রোহিঙ্গারা। মায়ানমারে ভ্রমণ, শিক্ষা, চিকিৎসার জন্য পরিচয় পত্র থাকাটা খু্ব জরুরি বিষয়। কিন্তু মায়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের পরিচয় পত্র ইস্যু করে না, ফলে, এমনিতেই পিছিয়ে পড়া রোহিঙ্গারা আরো পিছিয়ে পড়ছে।
মায়ানমার থেকে যখনি রোহিঙ্গারা সীমান্ত পার হয়...
রোহিঙ্গাদের সমস্যা শুরু হলেই বাংলাদেশের ইন্টারনেটে বা অনলাইনে ছড়িয়ে পরে হাজার হাজার রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভুয়া ছবি।
এসব ছবি কারা ছড়ায় তা দিনের আলোর মতোই পরিস্কার।কিন্তু দেখা যায় অনেক সচেতন মানুষও এসব ভুয়া ছবির ফাঁদে পা দেয়।
মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন হচ্ছে এটা সত্য। কিন্তু নির্যাতনের যেসব ছবি অনলাইনে ছড়িয়ে পরেছে তা অধিকাংশই ভুয়া।মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের এলাকায় কোন সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারছে না, এমনকি জাতিসংঘের কোন সংস্থাও না।জাতিসংঘ স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কিছু ছবি তুলছে কিন্তু তাও খুবই অল্প।
তাছাড়া আপনি কি মনে করেন মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের হত্যা, নির্যাতন করে তার ছবি তারা অনলাইনে ছাড়বে? যেখানে রোহিঙ্গারা ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে সেখানে তারা ছবি তুলবে এমন ভাবনাও পাগলের ভাবা।রোহিঙ্গা নির্যাতনের ছবি কেউ পাক আর না পাক বাংলাদেশের ছাগুরা সবার আগে পাবে। তারমানে যখন রোহিঙ্গারা নির্যাতিত হয় তখন ছাগুরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে ছবি তোলে ?
EmoticonEmoticon