বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৯

লিটন নন্দী কেন ভিসি ভবনে বসলো না?

ছাত্র ইউনিয়ন বানের জ্বলে ভেসে আসা কোন কচুরিপানা নয়। তার রয়েছে দীর্ঘদিনের আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস।

তাহলে শিক্ষার্থীদের উপর আক্রমণ করা হলো ছাত্র ইউনিয়ন চুপ কেন?
নুরের সঙ্গে লিটন নন্দী কেন ভিসি ভবনে বসলো না?
এই তো আপনার আলোচনা?

শুনেন, হঠাৎ গজিয়ে ওঠা কোন আগাছা নয় যে ছাত্র ইউনিয়ন যার তার সঙ্গে আন্দোলন সংগ্রামে যাবে। ছাত্র ইউনিয়নের নিজস্ব রাজনীতি রয়েছে। ছাত্র ইউনিয়ন অরাজনৈতিক সংগঠন নয়।

কিছুক্ষণের জন্য আমাদের একটু পিছনে ফিরে যেতে হচ্ছে। ডাকসু নির্বাচন। জোট গঠনের জন্য চলছে বিভিন্ন সংগঠন গুলোর সঙ্গে তুমুল আলোচনা। শেষ পর্যন্ত গঠন হল "প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য"। সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের সঙ্গে ছাত্র ইউনিয়নের নীতিগত ঐক্য হয়নি। কোটা আন্দোলনের নেতারা অসাম্প্রদায়িক চেতনাবোধে আগ্রহী নয়। ছাত্র শিবিরের সঙ্গে জড়িত থাকুক আর না থাকুক; তাদের মনোবৃত্তি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নেওয়া হয় না। স্বতন্ত্র জোট কিছু রোমান্টিসিজমে ভোগা ছেলেমেয়ের প্লাটফর্ম। ফলে তাদের কারো সঙ্গে জোটবদ্ধতা সম্ভব হয়নি। শুধু ভোট ডাকাতির প্রশ্নে, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে, নির্বাচন বাতিলের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। নুরদের সঙ্গে লিটন নন্দীদের মতাদর্শের ঐক্য হয়নি। তাই আজ নুর যখন ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নিয়ে প্রকাশ্যে ভিসি বাসভবনে অবস্থা নেয়; তখন ছাত্র ইউনিয়ন কেন যায়নি এই প্রশ্ন তুলা হয়...যারা প্রশ্ন তুলে তাদের প্রতি অনুরোধ ছাত্র ইউনিয়নের ঘোষণাপত্র পড়ুন।
এছাড়া নুরের রাজনৈতিক চরিত্র সম্পর্কে সকলেই অবগত রয়েছে। তিনি নিজেকে নির্বাচিত ভিপি মনে করেন। এবং জোর গোলায় তা প্রচার করেন। প্রথমত নুর নির্বাচন বয়কট করে, নির্বাচন কে অবৈধ ঘোষণা করা সত্ত্বেও আবার সেই নির্বাচনের বৈধতা দিয়েছে...ভিপি পদ গ্রহণ করে। স্বতন্ত্র জোট সহ (প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য জোট থেকে ছিটকে পড়া) বেনজিরও নুরের বিভ্রান্তমূলক অপরিপক্ব রাজনৈতিক চরিত্রকে সমর্থন জাগিয়ে চলছে। এর পরিণতিতে মৌলবাদের চাষাবাদ নিশ্চিত করা হচ্ছে। ছদ্মবেশী মোল্লাতন্ত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কে কলঙ্কিত করেছে। এইক্ষেত্রে ছাত্র ইউনিয়ন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। ছাত্র ইউনিয়ন প্রতারণার রাজনীতি করে না বলেই আজও সে ঠিকে আছে। লিটন নন্দীরা কেন ভিসি ভবনে যাইনি...তার কারণ পরিষ্কার ছাত্র ইউনিয়নের নিকট নুর হচ্ছে তার সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক; সে ভিপি নয়। ছাত্র ইউনিয়ন ডাকসুর এই পাতানো নির্বাচন সহ এর ফলাফল কে প্রত্যাখ্যান করেছে। নুর যদি এই বিষয়ে ঠিকঠাক থাকতো তাহলে তাকে বিশ্বাস করা যেতো। নুর সাধারণ শিক্ষার্থীদের হতাশ করেছে। তাদের আবেগ নিয়ে খেলা করতেছে। তাই তাকে ডিম মারা সত্ত্বেও আন্দোলন সংগঠিত হচ্ছে না। তার ভোটারা মিছিল বের করতেছে না। আসলে নুরকে আর বিশ্বাস করা যায় না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে নুর হলো নব্য এরশাদ।

ছাত্র ইউনিয়ন সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছিল, আছে এবং থাকবে। বর্তমানে ছাত্র ইউনিয়ন তার সংগঠনকে সংগঠিত করার কাজে, প্রত্যেক হলে হলে, স্কুল, কলেজে সংগঠন বিস্তারের কাজে...তার জাতীয় সম্মেলন আহবান করেছে। আমরা ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা এই কাজকেই এখন প্রধান কর্তব্য বলে জানি। কারণ সংগঠন ছাড়া আন্দোলন সংগ্রাম করা যায় না। চুপ থাকা মানে চুপ না আরো দ্বিগুণ শক্তিতে ফিরে আসা।


EmoticonEmoticon